চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস, চট্টগ্রাম বন্দর ও সেনাবাহিনীতে ভুয়া নিয়োগ প্রক্রিয়ায় জড়িত সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের ৩ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) চট্টগ্রাম মেট্রোর সদস্যরা।
গত ১২ ডিসেম্বর ঢাকা থেকে একজনকে এবং ১৭ ডিসেম্বর পাঠানটুলি এলাকার একটি হোটেল থেকে এই চক্রের অপর ২ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানান পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো’র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মঈন উদ্দিন।
গ্রেফতার প্রতারকরা হলেন- ঝালকাঠির বড় কৈবর্ত্যখালী এলাকার মো. রিপন সিকদার (৩০), ফেনীর দক্ষিণ গুখুমা এলাকার আনোয়ারুল হোসেন প্রকাশ আতিক (৪৫) ও নারায়ণগঞ্জের চর তালিমাবাদ দক্ষিণ পাড়ার মো. তোফাজ্জল হোসেন (৫৪)।
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর প্রেস ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মঈন উদ্দিন বলেন, গত ১২ ডিসেম্বর প্রতারক চক্রের সদস্য রিপন সিকদারকে ঢাকায় আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে অপর দুই প্রতারকের নাম জানা যায়। এরপর টানা অনুসন্ধান চালিয়ে ১৭ ডিসেম্বর বিকাল ৪টায় পাঠানটুলির হোটেল পূরবী থেকে আনোয়ারুল ও তোফাজ্জলকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় তাদের কাছে ভুয়া নিয়োগপত্র, প্রবেশপত্র, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স, প্রশ্নপত্র ও উত্তরপত্র, পেনড্রাইভসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম পাওয়া যায়।
পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর পুলিশ কর্মকর্তা সন্তোষ কুমার চাকমা জানান, জিজ্ঞাসাবাদ এবং পেনড্রাইভে থাকা তথ্য ঘেঁটে দেখা গেছে- ২০১৫ সাল থেকে সংঘবদ্ধ চক্রটি সরকারি প্রতিষ্ঠানে টাকার বিনিময়ে নিয়োগের কথা বলে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে লোক সংগ্রহ করে তাদের টাকা হাতিয়ে নেয়। এই কাজে তারা নিজেরাই বিভিন্ন পদের জন্য ভুয়া প্রবেশপত্র, প্রশ্নপত্র, উত্তরপত্র, পুলিশ ভেরিফিকেশন, নিয়োগপত্র বানিয়ে হোটেলে এনে নিয়োগপ্রার্থীর পরীক্ষা নেয়। সম্পূর্ণ টাকা পাওয়ার পর হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয় কথিত নিয়োগপত্র।
এ পর্যন্ত তারা ২৩ জনকে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের নিয়োগপত্র, ২০ জনকে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স পত্র, ২১ জনকে নিয়োগপত্র, চট্টগ্রাম বন্দরে ১ জনের নামে নিয়োগপত্র ও পুলিশ ক্লিয়ারেন্স, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে ৪ জনের নামে নিয়োগপত্র ও এনবিআরে ২৭ জনের নামে নিয়োগপত্র দিয়েছে বলেও জানান তিনি।
এর আগে গত ৮ সেপ্টেম্বর প্রতারকদের খপ্পরে পড়ে টাকার বিনিময়ে নিয়োগপত্র নিয়ে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে গিয়েছিলেন সাইফুল ইসলাম, আব্দুল গফুর ও মিলন চক্রবর্তী। প্রতারণার বিষয়টি জানতে পেরে তারা প্রতারক আনোয়ারুল হোসেনের নামে অভিযোগ করেন। এসময় তারা দাবি করেছিলেন, ৮-১২ লাখ টাকার বিনিময়ে তাদেরকে ভুয়া নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছিল।