মিয়ানমার প্রতিনিধি দলের সঙ্গে তৃতীয় দফা বৈঠকের পরও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে ইতিবাচক কোনো সিদ্বান্ত আসেনি। রোহিঙ্গা নেতারা বলছেন, বারবার এসে সেই পুরনো কথাই বলছে মিয়ানমার। এ ধরনের বৈঠকে কোনো ফল আসবে না। আমরা এবারও হতাশ।
বুধবার ও বৃহস্পতিবার (১৮ ও ১৯ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত বৈঠকে রোহিঙ্গাদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন দাবি-দাওয়া তুলে ধরেন আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের চেয়ারম্যান মুহিব উল্লাহ, সেক্রেটারি সৈয়দ উল্লাহসহ রোহিঙ্গা নেতারা।
এছাড়া বৈঠকে রোহিঙ্গা নেতা মাস্টার আব্দুর রহিম উপস্থিত ছিলেন। আরও ছিলেন পাঁচ নারী রোহিঙ্গাসহ ৪৭ মুসলিম রোহিঙ্গা এবং ১৫ জন হিন্দু শরণার্থী।
রোহিঙ্গা নেতা মুহিব উল্লাহ বলেন, মিয়ানমার ঘুরে ফিরে সেই পুরনো প্রস্তাবই আমাদের দিয়েছে। আমরা তাদের বলেছি, নাগরিকত্ব, নিরাপত্তা ও সুরক্ষার নিশ্চয়তা এবং নিজেদের ভিটে-বাড়ি ফিরে পাওয়া না গেলে আমরা মিয়ানমারে যাব না। কিন্তু তাদের আচরণে আমরা বরাবরের মতো হতাশ। তাই আমরা তাদের প্রস্তাবে রাজি হইনি। তাই কোনো সিদ্বান্ত ছাড়াই দুইদিনের বৈঠক শেষ হয়েছে।
মিয়ানমারের আন্তর্জাতিক সংস্থা ও অর্থনৈতিক বিভাগের ডিরেক্টর জেনারেল চ্যান অ্যায়ের নেতৃত্বে বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলতে দুইদিনের সফরে কক্সবাজার পৌঁছে দেশটির উচ্চপর্যায়ের নয় সদস্যের এবং আসিয়ানের ছয় সদস্যের প্রতিনিধ দল।
এর আগে ২০১৮ সালের ১১ এপ্রিল মিয়ানমারের সমাজকল্যাণমন্ত্রী উইন মিয়াট আয়ের নেতৃত্বে এবং চলতি বছরের ২৭ ও ২৮ জুলাই মিয়ানমারের পররাষ্ট্রসচিব মিন্ট থোয়ের নেতৃত্বে ১৯ সদস্যের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল ও আসিয়ান প্রতিনিধি দল রোহিঙ্গাদের সঙ্গে বৈঠক করে। সেই বৈঠকও শেষ হয় কোনো সিদ্বান্ত ছাড়া।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. আবুল কালাম বেনারকে বলেন, দুইদিন ধরে রোহিঙ্গাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে মিয়ানমার প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। চূড়ান্ত কোনো সিদ্বান্ত না আসলেও এ আলোচনা অব্যাহত রাখতে সবাই সম্মত হয়েছে।