পরিস্থিতি, পরিবেশ, প্রেক্ষাপট ও মানুষের রুচির পরিবর্তন হচ্ছে উল্লেখ করে সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেছেন, নগরে চাপ বাড়ছে মানুষের। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসছেন। ওভার লোডেড হয়ে গেছে। এ মুহূর্ত থেকে নতুন চিন্তা করা উচিত। নগরের সীমা বাড়ানো সময়ের দাবি।
শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) নগরের শেরশাহে চট্টগ্রাম সাংবাদিক কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি লিমিটেডের ফ্ল্যাটব্লক কাম শপিং ও কমিউনিটি সেন্টার প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, মিরসরাইতে বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরে ১৫ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হবে। আনোয়ারায় দুইটি ইকোনমিক জোন হবে। সেখানে কর্মসংস্থান হবে। তারা থাকবেন চট্টগ্রাম শহরে। তাই এ মুহূর্ত থেকে উদ্যোগী হতে হবে নগর সম্প্রসারণে। এ নগর অপরিকল্পিত ভাবে গড়ে উঠেছে। নাগরিক সুযোগ সুবিধা নেই। পরিবেশ বান্ধব স্বাস্থ্যসম্মত নগর এটা? পশু জবাইখানা নেই, ড্রেনেজ ব্যবস্থা নেই।
মেয়র বলেন, আবাসিক এলাকা আছে নামে। আবাসিক এলাকায় বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান হয়েছে। নাগরিকবোধ নেই। তাই সাংবাদিকদের জনমত তৈরি করতে হবে। বাস্তবধর্মী বিষয় ইতিবাচকভাবে তুলে ধরতে হবে।নাগরিক দায়বদ্ধতা উপলব্ধিতে না থাকলে কাঙ্ক্ষিত, প্রত্যাশিত নগর হবে না। নগরের জন্য সুন্দর পরিকল্পনা মাস্টারপ্ল্যান গ্রহণ সময়ের দাবি। কোন সংস্থা কী কাজ করবে তা নির্ধারণ করতে হবে।
ইউটিলিটি সার্ভিস লাইনের গুরুত্ব তুলে ধরে আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, এক সড়ক বার বার কাটছে। যত রিপেয়ার করি না কেন দিন শেষে সিটি করপোরেশনকে দায়ী করা হচ্ছে। ইউটিলিটি সার্ভিস লাইন তৈরির এখনো সময় আছে। তাহলে বার বার সড়ক কাটতে হবে না। কিন্তু ওয়াসা, টিঅ্যান্ডটি সড়ক কাটছে, পিডিবিও কাটবে। এভাবে চলতে থাকলে ব্যক্তি আসবে আবার চলেও যাবে। দিনশেষে যারা থাকবে তারা ভুক্তভোগী হবেন।
তিনি বলেন, সহযোগিতা না করলে বিরোধিতা করা উচিত নয়। আমি দেখি প্রথম দিন থেকেই অনেকে বিরোধিতা করে। অনেকে সংকীর্ণতায় ভোগে। এগুলো থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। কাউকে অপছন্দ করলেও তার ভালো কাজকে সমর্থন দিতে হবে। বাস্তবতার নিরিখে সমাজকে পরিবর্তন করতে হবে।
সাংবাদিক হাউজিং সোসাইটির ফ্ল্যাটব্লক প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, এ প্রকল্প নিয়ে অনেকবার কথা হয়েছে। মামলার কারণে আটকে ছিল। আলোচনার মাধ্যমে সম্মানজনক সমাধান হয়েছে। ফ্ল্যাট কাম শপিং ও কমিউনিটি সেন্টারে ১৮০ ফ্ল্যাট হবে সাংবাদিকদের জন্য। ইতিমধ্যে এ সোসাইটিতে সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে রাস্তাঘাট নির্মাণ ও আলোকায়ন করেছি।
তিনি বলেন, আমি সাংবাদিকবান্ধব ছিলাম। সাংবাদিকদের সঙ্গে আমার আত্মার বন্ধন ছিল, আছে। কখনো এ নিউজ কেন করেছেন জানতে চাইনি। সবার সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে চেয়েছি।
আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দল বিবেচনা করবে, মনোনয়ন দেবে। আমি আবার মেয়র নির্বাচিত হলে সাংবাদিক হাউজিং সোসাইটির এ প্রকল্পকে অগ্রাধিকার দিয়ে বিবেচনা করবো।
মেয়র বলেন, মানুষ হিসেবে দৃষ্টিভঙ্গিগত পার্থক্য থাকবে। মায়ের পেটের ভাই হলেও পার্থক্য থাকে। একেকজনের পছন্দ ভিন্ন। জোর করে চাপিয়ে দেওয়া উচিত নয়।
সোসাইটির পরিচালক ও বিএফইউজের যুগ্ম মহাসচিব মহসীন কাজীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি আবু সুফিয়ান, হাউজিং সোসাইটির সাবেক চেয়ারম্যান মঈনুদ্দিন কাদেরী শওকত, বিএফইউজের সহ-সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, প্রকল্পের কনসালটেন্ট স্থপতি আশিক ইমরান, সোসাইটির পরিচালক মনজুরুল আলম মঞ্জু, সিনিয়র সাংবাদিক শামসুল হক হায়দরী, অ্যাডভোকেট সুখময় চক্রবর্তী প্রমুখ।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন সোসাইটির সেক্রেটারি ও চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক হাসান ফেরদৌস।