ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের একজন ছাত্রী রাজধানীর কুর্মিটোলা এলাকায় ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
রবিবার (৫ জানুয়ারি) রাত দেড়টার দিকে ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের উপ-সহকারী পরিদর্শক (এএসআই) আব্দুল খান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের একজন ছাত্রী কুর্মিটোলায় ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে আমরা জানতে পেরেছি। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কর্তব্যরত চিকিৎসকের কাছে তিনি (ভুক্তভোগী ছাত্রী) ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন।
ঢামেক হাসপাতালে উপস্থিত ভুক্তভোগীর একজন সহপাঠী জানান, রবিবার বিকাল সাড়ে ৫টার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে করে ওই ছাত্রী বান্ধবীর বাসায় যাচ্ছিলেন। কুর্মিটোলা বাসস্টেশনে নামার পর তাকে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি অনুসরণ করতে থাকে। মাঝপথে তাকে ধরে নির্জন স্থানে নিয়ে ধর্ষণ করে। ঘটনাটি সন্ধ্যা ৭টা থেকে ৮টার মধ্যে ঘটেছে। পরে রাত ১০টার দিকে জ্ঞান ফেরে ওই ছাত্রীর। এরপর তিনি রিকশায় করে বান্ধবীর বাসায় যান। সেখান থেকে বান্ধবীসহ অন্য সহপাঠীরা তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেন। তিনি এখন ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে রয়েছেন। খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন সাদেকা হালিম ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সামিনা লুৎফা হাসপাতালে আসেন।
এ ব্যাপারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, ‘ঘটনা শোনার পরপরই বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে। ওই ছাত্রীকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়েছে। তার সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন রয়েছে।’
সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী একটি অপ্রীতিকর ঘটনার শিকার হয়েছেন। ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। তাকে এখন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এটি অত্যন্ত ন্যক্কারজনক ঘটনা। আমরা এর প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে ওই ছাত্রীর বাবা মামলা দায়ের করেন। ঘটনাস্থল চিহ্নিত করে আলামত সংগ্রহ করেছে পুলিশ। থানা পুলিশের পাশাপাশি ঘটনা তদন্তে ডিবি ও র্যাব কাজ শুরু করেছে।
সোমবার (৬ জানুয়ারি) সকালে মামলা দায়ের করা হয় বলে জানিয়েছেন ক্যান্টনমেন্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী সাহান হক।
তিনি বলেন, ‘ভিকটিমের বাবা বাদী হয়ে মামলা করেছেন। আসামিরা সব অজ্ঞাত। তদন্ত শুরু হয়েছে।’
এদিকে, ক্যান্টনমেন্ট থানা পুলিশের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, ‘রাতে ঘটনা ঘটলেও সকালে বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করেছেন তারা। ঘটনাস্থল চিহ্নিত করে আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। ভিকটিমের কয়েকজন সহপাঠী ও বন্ধুরা সকালে ঘটনাস্থল চিহ্নিত করতে পুলিশকে সহায়তা করেন। পুলিশ ওই এলাকার সব সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করার চেষ্টা করছে। ঢাবির বিআরটিসি’র বাসের চালককেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’