মার্কিন ড্রোন হামলায় নিহত ইরানি জেনারেল কাসেম সোলাইমানিকে হত্যা বেআইনি আখ্যা দিয়েছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ। মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) এই হত্যাকাণ্ডকে তিনি সৌদি আরবের নির্বাসিত সাংবাদিক জামাল খাশোগির হত্যাকাণ্ডের শামিল বলে মন্তব্য করেছেন। এই হত্যাকাণ্ডের পর কোনটিকে সন্ত্রাসবাদ বলা হবে তা নিয়ে উত্তেজনা বাড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন মালয়েশীয় প্রধানমন্ত্রী। এই মুহূর্তে মুসলিম দেশগুলোর ঐক্যবদ্ধ হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে গত ৩ জানুয়ারি ভোরে বাগদাদ বিমানবন্দরে ড্রোন হামলা চালিয়ে ইরানের প্রভাবশালী জেনারেল কাসেম সোলাইমানিকে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনার চরম প্রতিশোধ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ইরান। এনিয়ে ওয়াশিংটন-তেহরান উত্তেজনার মধ্যে মঙ্গলবার এই ইস্যুতে কথা বলেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী।
সাংবাদিকদের উদ্দেশে মাহাথির মোহাম্মদ বলেন, এখনই মুসলিম দেশগুলোর ঐক্যবদ্ধ হওয়ার সঠিক সময়। তিনি বলেন, ‘আমরা এখন আর নিরাপদ নই। কেউ যদি কাউকে অবজ্ঞা করে বা কারও পছন্দ মতো কথা না বলে তাহলে অন্য দেশ থেকে ওই ব্যক্তির পক্ষে ড্রোন পাঠানো এবং সম্ভবত আমার উপর গুলি চালানোও ঠিক আছে’।
জেনারেল সোলাইমানির হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে মাহাথির মোহাম্মদ বলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ড সাংবাদিক জামাল খাশোগির হত্যাকাণ্ডের সমান। তাকে বিদেশের মাটিতে হত্যা করা হয়। নিজ দেশের স্বার্থে অন্য দেশের কোনও নেতাকে হত্যার মতো কাজ এটা। উভয়েই (যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরব) অনৈতিক ও আইন বিরুদ্ধ কাজ করেছে’। উল্লেখ্য, ওয়াশিংটনে নির্বাসিত সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে ২০১৮ সালের অক্টোবরে তুরস্কের ইস্তানবুল দূতাবাসে হত্যা করে সৌদি এজেন্টরা।
নিজের মতামত বিশ্ব দরবারে তুলে ধরা অব্যাহত রাখবেন কিনা জানতে চাইলে মাহাথির বলেন, সত্য প্রকাশ অব্যাহত রাখবো। তিনি বলেন, কে ক্ষমতাধর আর কে দুর্বল তা নিয়ে আমি ভীত নই। কোনও কিছু সঠিক না হলে আমি বলে করি আমার সত্য প্রকাশের অধিকার আছে’।
প্রসঙ্গত, মালয়েশিয়ায় প্রায় দশ হাজার ইরানি বসবাস করে বলে ধারনা করা হয়। যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে রাখলেও মধ্যপ্রাচ্যের দেশটির সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করেন মাহাথির। গত মাসে মালয়েশিয়ায় আয়োজিত মুসলিম দেশগুলোর নেতাদের এক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি।