রাজধানীর অভিজাত এলাকা ধানমন্ডির ভাড়া বাসায় স্ত্রী-সন্তানসহ দীর্ঘদিনের বসবাস সাইফুল ইসলামের। এলাকার প্রায় সবাই তাকে চিনতেন ‘ভালো মানুষ’ হিসেবে। কিন্তু রাত হলেই ওই বাসাতেই চালু হতো জালনোট তৈরির নানা কার্যক্রম।
শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) ধানমন্ডি ৭/ই এলাকার একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে কয়েক কোটি টাকার জালনোট উদ্ধার করে র্যাপিড অ্যাকশান ব্যাটালিয়ন (র্যাব-১০)।
র্যাব জানায়, তার বাসার ওয়্যারড্রব এবং খাটের নিচ থেকে কয়েক কোটি টাকার জালনোট উদ্ধার করা হয়েছে। নোটগুলো সব ৫০০ ও ১০০০ হাজার টাকার।
এ সময় ওই বাসা থেকে জালনোট তৈরির কাগজ, প্রিন্টার, টোনার, কেমিক্যাল, ডায়াসসহ সব সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে। সাইফুল রাজধানীর অন্যতম জালনোট তৈরির কারিগর।
র্যাব-১০ এর অধিনায়ক (সিও) অতিরিক্ত ডিআইজি কাইয়ুমুজ্জামান খান বলেন, ঈদ সামনে রেখে জালনোটের একটা প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। বেশ কিছুদিন ধরে রাজধানীতে একটি জালনোট তৈরির চক্র কাজ করছে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে র্যাবের গোয়েন্দা দল চক্রটি ধরতে নজরদারি শুরু করে।
বৃহস্পতিবার (০৯ জানুয়ারি) দিনগত রাতে রাজধানীর কদমতলী থেকে এক লাখ ৯০ হাজার জালনোটসহ শাহ আলম নামের একজনকে আটক করা হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ধানমন্ডির একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে সাইফুলকে আটক করা হয়। এরপর তার বাসায় তল্লাশি করে কয়েক কোটি টাকার জালনোট উদ্ধার করা হয়।
র্যাব জানায়, স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ২০১৪ সাল থেকে ওই ভাড়া বাসায় বসবাস করে আসছেন সাইফুল। তার স্ত্রী-সন্তান গ্রামের বাড়ি বেড়াতে গেছে বলে জানা গেছে। তাই প্রাথমিকভাবে তাদের বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি।
সাইফুল এলাকায় একজন ভদ্র মানুষ হিসেবে পরিচিত হলেও রাতেই বাসায় শুরু করতেন জালনোট তৈরির ব্যাপক কর্মজজ্ঞ। এই বাসা থেকে জালনোট তৈরি করে বিভিন্ন চক্রের মাধ্যমে ছড়িয়ে দিতেন রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায়।
এখানে তৈরি জাল ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোটগুলো খুবই নিখুঁত। যা সহজেই শনাক্ত করা সম্ভব নয়। চক্রের সক্রিয় অন্য সদস্যরা র্যাবের নজরদারিতে রয়েছে। যেকোনো সময় তাদেরকে গ্রেফতার সম্ভব হবে বলে জানান র্যাব-১০ অধিনায়ক।