কক্সবাজারের টেকনাফে স্বরাস্ট্রমন্ত্রীর হাতে ইয়াবা ও অস্ত্র জমা দিয়ে আত্মসমর্পণকারী ১০২ ইয়াবা কারবারির মধ্যে ১০১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ জমা দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (২০ জানুয়ারি) কক্সবাজারের ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারিক হাকিম তামান্না ফারাহ এর আদালতে পুলিশ এ চার্জশিট জমা দেয়। কক্সবাজারের কোর্ট ইন্সপেক্টর মাহবুবর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মাহবুবর রহমান বলেন, মূলত ১০২ জন আত্মসমর্পণ করলেও একজনের মৃত্যু হওয়ায় তার নাম চার্জশিট থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি, তদন্ত) এবিএম এস দোহা জানান, ২০১৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি টেকনাফে আনুষ্ঠানিকভাবে ১০২ জন ইয়াবা ও অস্ত্র জমা দিয়ে আত্মসমর্পণ করেন। এ সময় মাদক ও অস্ত্র আইনে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়। দীর্ঘ তদন্তকাজ শেষে মামলা দুটির অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, কারাগারে থাকাকালীন সময়ে টেকনাফ সাবরাং ইউনিয়নের মুন্ডারডেইল এলাকার ফজল আহমদের ছেলে মোহাম্মদ রাসেলের মৃত্যু হয়। যে কারণে তাকে চার্জশিট থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
যাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দেওয়া হয়েছে তারা হলেন- টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের মোয়াজ্জেম হোসেন ওরফে দানু মেম্বার, শাহপরীর দ্বীপের রেজাউল করিম মেম্বার, সামশু মেম্বার, সাহেদ রহমান নিপু, সাহেদ কামাল, নুরুল আমিন, আলী আহমদ, মৌলভী বশির, হোসেন আহমদ, শওকত আলম, রাসেল, ডেইল পাড়ার নুরুল আমিন, মুন্ডার ডেইলয়ের মনজুর, আলীর ডেইলের জাফর আহমদ, আবদুল হামিদ, শামীম, দক্ষিণ নয়াপাড়ার নূর মোহাম্মদ, আলমগীর ফয়সাল, ডেইল পাড়ার মো. সাকের মিয়া, নয়াপাড়ার তৈয়ব, টেকনাফ পৌর এলাকা ও সদর ইউনিয়নের আবদু শুক্কুর, আমিনুর রহমান ওরফে আবদুল আমিন, দিদার মিয়া, আবদুল আমিন, নুরুল আমিন, শফিকুল ইসলাম সফিক, ফয়সাল রহমান, আবদুর রহমান, জিয়াউর রহমান, পৌর কাউন্সিলর নুরুল বশর ওরফে নুরশাদ, দক্ষিণ জালিয়াপাড়ার ইমাম হোসেন, বড় হাবিব পাড়ার ছিদ্দিক, পুরনো পল্লানপাড়ার শাহ আলম, অলিয়াবাদের মারুফ বিন খলিল বাবু, মৌলভী পাড়ার একরাম হোসেন, মধ্যম ডেইল পাড়ার মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, চৌধুরী পাড়ার মংমং ছেং ওরফে মমচি ও দক্ষিণ জালিয়া পাড়ার জুবাইর হোসেন, মধ্যম জালিয়া পাড়ার মোজাম্মেল হক, ডেইল পাড়ার আবদুল আমিন, নাজির পাড়ার এনামুল হক মেম্বার, ভুট্টোর ভাগিনা আফসার, আবদুর রহমান, সৈয়দ হোসেন, রফিক, হেলাল, জামাল হোসেন, মৌলভী পাড়ার আলী, নাইটং পাড়ার ইউনুস, উত্তর লম্বরীর আবদুল করিম ওরফে করিম মাঝি, সদর কচুবনিয়ার বদিউর রহমান, রাজার ছড়ার আবদুল কুদ্দুস, জাহালিয়া পাড়ার মো. সিরাজ, নতুন পল্লানপাড়ার সেলিম, নাইট্যং পাড়ার রহিম উল্লাহ, চৌধুরী পাড়ার মোহাম্মদ আলম, তুলাতলীর নুরুল বশর, হাতিয়ার ঘোনার দিল মোহাম্মদ, মোহাম্মদ হাছন, রাজার ছড়ার হোসেন আলী, উত্তর জালিয়াপাড়ার নুরুল বশর মিজি, আবদুল গনি, জালিয়া পাড়ার মো. হাশেম, পুরান পল্লান পাড়ার ইসমাইল, নাইট্যংপাড়ার আইয়ুব, নুর হাবিব, মাঠপাড়ার কামাল, শিলবনিয়াপাড়ার আয়ুব, জালিয়াপাড়ার আলম, নুরুল আলম, বাহারছড়া ইউনিয়নের জাহাজ পুরার নুরুল আলম, শামলাপুর জুমপাড়ার শফি উল্লাহ, ছৈয়দ আলম, উত্তর শীলখালীর আবু ছৈয়দ, হ্নীলা ইউনিয়নের হ্নীলা পশ্চিম লেদার নুরুল হুদা মেম্বার, আলী খালীর জামাল মেম্বার, শাহ আজম, পশ্চিম সিকদারপাড়ার ছৈয়দ আহমদ, রশিদ আহমদ, পশ্চিম লেদার নুরুল কবীর, পূর্ব লেদার জাহাঙ্গীর আলম, জাদিমোরার মোহাম্মদ হাসান আবদুল্লাহ, লেদার ফরিদ আলম, হোছন, জহুর আলম, আবু তাহের, বোরহান, হামিদ, রবিউল আলম, আলীখালীর হারুন, হ্নীলা পশ্চিম সিকদার পাড়ার মাহাবুব, বাজারপাড়ার শাহ, পূর্ব পানখালীর নজরুল ইসলাম, পশ্চিম পানখালীর নুরুল আবছার, ফুলের ডেইলের রুস্তম আলী, আলী নেওয়াজ, আবু তৈয়ব ও রমজান ও কক্সবাজারের শাহজাহান আনসারী।
২০১৯ সালের ১৬ ফ্রেব্রুয়ারি টেকনাফ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এমপি, আইজিপি ড. জাবেদ পাটোয়ারী উপস্থিতিতে এক অনুষ্ঠানে ১০২ জন তালিকাভুক্ত ইয়াবা কারবারি আত্মসমর্পণ করেন। এদের মধ্যে আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি আবদুর রহমান বদির আপন চার ভাইসহ ঘনিষ্ঠ আট আত্মীয় ছিল। অনুষ্ঠান শেষে ওই দিনই দুটি মামলায় আটক দেখিয়ে আত্মসমর্পণকারীদের কক্সবাজার কারাগারে পাঠানো হয়। ১০২ ইয়াবা ব্যবসায়ীর মধ্যে একজন ছাড়া বাকি সবাই টেকনাফের বাসিন্দা।