কৃষি জমির মাটি যাচ্ছে ইটভাটায়, ফসল-সড়কের ক্ষতি

ফেনীর সোনাগাজীতে কৃষি জমির মাটি ইটভাটায় বিক্রির ফলে ফসলি জমি ও সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ উঠেছে।

মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) বিকেলে কৃষি জমির মাটি বিভিন্ন ইটভাটায় বিক্রির অভিযোগে স্থানীয় গ্রামবাসী তিনটি ট্রাক্টর আটক করেছে।

এলাকাবাসী জানায়, আমিরাবাদ ইউনিয়নের নিজাম উদ্দিন মুন্না ও মফিজুর রহমানের নেতৃত্বে একটি সিন্ডিকেট গত কয়েক দিন ধরে আমিরাবাদ ও মতিগঞ্জ ইউনিয়নের চরকৃষ্ণজয় গ্রাম ও স্বরাজপুর গ্রামের চড়ইয়া হাতর থেকে ফসলি জমির মাটি উত্তোলন করে ইটভাটায় বিক্রি করে আসছে। ইতোমধ্যে কয়েকটি পাকা পুল, কালভার্ট ও সড়ক ভেঙে গেছে। এতে বিক্ষব্ধ এলাকাবাসী মতিগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান রবিউজ্জামান বাবুর সহযেগিতায় দুপুরে স্বরাজপুর গ্রাম থেকে মাটিসহ তিনটি ট্যাফে ট্রাক্টর আটক করে।

মতিগঞ্জ ইউপির চেয়ারম্যান রবিউজ্জামান বাবু ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, কৃষি জমি থেকে মাটি কাটা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ হলেও একাধিক সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন ধরে মতিগঞ্জ ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা থেকে ফসলি জমির মাটি কেটে বিভিন্ন ইটভাটায় বিক্রি করে আসছে। যার ফলে সড়ক, পুল ও কালভার্টগুলো ভেঙে গেছে। বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী তিনটি ট্রাক্টর আটক করে আমাকে খবর দিলে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবগত করি।

স্বরাজপুর গ্রামের কৃষক নাছির উদ্দিন জানান, এক লোক থেকে ফসলি জমির মাটি ক্রয় করে মাটি দস্যু চক্রটি সে সহ বেশ কয়েকজন কৃষকের ফসলি জমির ওপর দিয়ে জোরপূর্বক মাটি বহন করে নিয়ে যাচ্ছে। ফলে নিরীহ কৃষকদের ফসলি জমির চরম ক্ষতি সাধন করে যাচ্ছে তারা। মাটি দস্যুরা প্রভাবশালী হওয়ায় ভয়ে কেউ মুখ খোলার সাহস পাচ্ছেন না।

একই গ্রামের কৃষক নাছির উদ্দিন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমরা নিরুপায় হয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যানের দ্বারস্থ হলে তিনি গ্রামবাসীকে ট্রাক্টরগুলো আটকের নির্দেশ দেন। বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ট্রাক্টরগুলো আটক করলে তিনি ঘটনাস্থলে যান।

আমিরাবাদ ইউনিয়নের চরকৃষ্ণজয় গ্রামের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য গোলাম কিবরিয়া শামীম জানান, ব্যাপারি বাড়ির আবুল খায়েরের ছেলে মফিজুর রহমানের নেতৃত্বে একটি সিন্ডিকেট গত কয়েক দিন ধরে চরকৃষ্ণজয় গ্রামের ফসলি জমির মাটি বিক্রি করে রাস্তা-ঘাটের ক্ষতি করেছে। দুই-তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের রাস্তারও ক্ষতি করেছে। ইতোমধ্যে নবনির্মিত একটি সড়ক যানচলালের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এভাবে চলতে থাকলে ফসলি জমির পাশাপাশি ওই এলাকার রাস্তাঘাট বিলীন হয়ে যাবে।

সোনাগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অজিত দেব জানান, ফসলি জমির মাটি বিক্রির ব্যাপারে কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। লিখিত অভিযোগ পেলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান চালিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে মাটি বিক্রি সিন্ডিকেটের হোতা নিজাম উদ্দিন মুন্না বলেন, আমি এক নারীর কাছ থেকে মাটি ক্রয় করে ব্যবসা করে যাচ্ছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *