দীর্ঘদিনের রেশনের দাবি পূরণ হয়েছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কর্মচারীদের। দশম গ্রেড থেকে নিচের বিভিন্ন পদবির কর্মচারীদের প্রতি পরিবারের সর্বোচ্চ চার সদস্যকে রেশন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এখন থেকে পুলিশসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মতো তারাও রেশন সুবিধা পাবেন। এজন্য অধিদফতরের এক হাজার কর্মচারীর জন্য প্রতিমাসে সরকারের অতিরিক্ত ভুর্তকি দিতে হবে ৩২ লাখ ৬ হাজার ১৬২ টাকা। বুধবার (১১ মার্চ) স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের পাঁচ কর্মচারীর হাতে প্রতীকী রেশন কার্ড তুলে দিয়েছেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের দশম গ্রেড থেকে নিচের বিভিন্ন পদবির সদস্যদের রেশনের দাবি ছিল দীর্ঘদিনের। প্রধানমন্ত্রীর কাছেও তারা এ বিষয়ে দীর্ঘদিন থেকে দাবি জানিয়ে আসছিলেন। দেশকে মাদকমুক্ত ও মাদকের বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্স বাস্তবায়নে কর্মীদের উৎসাহ দিতে প্রধানমন্ত্রী তাদের এ দাবি পূরণ করেন। গত বছরের ১৯ নভেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ থেকে ভর্তুকি মূল্যে রেশন দেওয়ার জন্য মঞ্জুরি দেওয়ার বিষয়টি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়ে অবহিত করা হয়। এরপর ২০ জানুয়ারি (২০২০) এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাদক শাখা থেকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরকে জানানো হয়।
এক সদস্য প্রতিমাসে ১১ কেজি চাল, ১২ কেজি আটা, পৌনে দুই কেজি চিনি, সাড়ে তিন কেজি ডাল ও আড়াই লিটার ভোজ্য তেল পাবেন রেশন হিসেবে। দুই সদস্যের জন্য রেশন দেওয়া হবে ২০ কেজি চাল, ২০ কেজি আটা, তিন কেজি চিনি, সাড়ে পাঁচ কেজি ডাল ও সাড়ে চার লিটার ভোজ্য তেল। তিন সদস্যের জন্য মাসিক রেশন দেওয়া হবে ৩০ কেজি চাল, ২৫ কেজি আটা, চার কেজি চিনি, সাত কেজি ডাল ও ছয় লিটার ভোজ্য তেল। আর চার সদস্যের জন্য রেশন দেওয়া হবে ৩৫ কেজি চাল, ৩০ কেজি আটা, পাঁচ কেজি চিনি, আট কেজি ডাল ও আট লিটার ভোজ্য তেল।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কর্মচারীদের জন্য রেশন দেওয়ার বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কর্মচারীদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল— যারা মাঠে ময়দানে কাজ করেন, তারা রেশন সুবিধা চাচ্ছেন। নাম মাত্র মূল্যে যেভাবে পুলিশ ও অন্যান্য বাহিনীর সদস্যরা রেশন পেয়ে থাকেন, ঠিক সেভাবে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের দশম গ্রেড থেকে নিচের পদবির কর্মচারীরা এই রেশন সুবিধার জন্য আবেদন করেছিলেন। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী তাদের রেশন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। অধিদফতরের এক হাজার কর্মচারী এই রেশন সুবিধার আওতায় আসবেন। তারা খুব স্বল্প মূল্যে সর্বোচ্চ চার সদস্য বিশিষ্ট পরিবারের জন্য রেশন পাবেন। আজকে (১১ মার্চ) আনুষ্ঠানিকভাবে সেই রেশন কার্ড হস্তান্তর করা হলো।’
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মহাপরিচালক জামাল উদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের জন্য এটি একটি স্মরণীয় দিন। তাদের দীর্ঘদিনের এই দাবি পূরণ হয়েছে। মাদকের বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়নে এই পদক্ষেপ বড় ভূমিকা পালন করবে।’