করোনার জেরে ভারতজুড়ে পোলট্রির ব্যবসায় ধস নেমেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া গুজবের জেরে মুরগির মাংস ও ডিম খাওয়ার ব্যাপারেও অনেকেই অনীহা প্রকাশ করছেন। তাই ১০ টাকা কেজিতেই মুরগি বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে পুনের ব্যবসায়ীরা।
ওয়ার্ল্ড ওমিটারস-এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, রবিবার (১৫ মার্চ) এই খবর লেখা পর্যন্ত ভারতে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে ১০৭ জন। এদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২ জনের। গোটা দেশজুড়েই আতঙ্কের পরিস্থিতি। এরমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে পড়েছে, মুরগি থেকে ছড়াচ্ছে করোনা ভাইরাস। এরপর সকলেই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন মুরগির মাংস থেকে।
মহারাষ্ট্রের এক চাষী জানান, করোনার জেরে এখন একশো শতাংশ লোকসানে চলছে পোলট্রির ব্যবসা। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো গুজবের জন্যই মুরগি কিনতে আগ্রহী নন কেউই। কয়েক সপ্তাহ আগেও ৮০ থেকে ৯০ টাকার মধ্যে এক কেজি মুরগির মাংস বিক্রি হয়েছে।
পুনের এক পোলট্রি ফার্মের মালিক প্রমোদ হিঙ্গে সে দেশের সংবাদমাধ্যম কলকাতা টোয়েন্টিফোর.কমকে জানান, কয়েক সপ্তাহ আগে তার প্রায় ১০ কোটি টাকার লোকসান হয়েছে। বাজারে মুরগির চাহিদা নেই। ফলে প্রান্তিক গ্রামে খুব কম দামে মুরগি বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন তিনি।
অন্যদিকে, পশুপাল বিভাগ ও ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, করোনার সঙ্গে মুরগির কোনও সম্পর্ক নেই। বার্ড ফ্লু নিয়ে আগে থেকেই মানুষের মনে ভীতি রয়েছে। সেই থেকেই তারা ভাবছেন করোনাও মুরগি থেকে ছড়ায়।
সরকারি কর্মী ও চাষীরা মানুষজনকে কিছুটা হলেও বোঝাতে পেরেছেন। তাতে অবস্থার কিছুটা উন্নতি হবে বলে ধারণা করছে সরকারি দফতর।
অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট বসন্ত কুমার শেট্টি জানিয়েছেন, গোটা মহারাষ্ট্রের পোলট্রি চাষীরা কয়েক সপ্তাহ আগে মোট ৭০০ কোটি টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। তার কথায়, মুরগির মাংস খাদ্যবস্তু। বহুদিন ধরে এটিকে সংরক্ষণ করে রাখা যায় না। যাই দাম হোক না কেন, মুরগি বিক্রি করতে হবে। এক সপ্তাহ আগে এক কেজি মুরগির মাংস বিক্রি হয়েছে মাত্র ৭০ টাকায়। সেই দাম বর্তমানে ১০ থেকে ২০ টাকায় নেমে গিয়েছে।