করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে গোমূত্রকেই বারবার সামনে আনার চেষ্টা করছে ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির অনেক নেতা ও হিন্দু মহাসভা। দিল্লিতে হিন্দু মহাসভার প্রধান স্বামী চক্রপাণির আয়োজনে গোমূত্র পানের অনুষ্ঠান করা হয়। এবার বিজেপির আয়োজনে কলকাতাতেও হলো একই ধরনের অনুষ্ঠান।
করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের কাছ থেকে ৬ হাজার ৭০০ নমুনা পরীক্ষা করার জন্য সংগ্রহ করেছে ভারত। নজরদারিতে রাখা হয়েছে প্রায় ৪২ হাজার মানুষকে। আন্তর্জাতিক জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ড ওমিটারের ওয়েবসাইট অনুযায়ী এখন পর্যন্ত দেশটিতে ১২৯ জন করোনা ভাইরাস আক্রান্ত ধরা পড়েছে এবং মৃত্যু হয়েছে তিনজনের।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকার খবরে বলা হয়, গতকাল সোমবার কলকাতার জোড়াসাঁকো এলাকার বিজেপি নেতা নারায়ণ চট্টোপাধ্যায় করোনা ঠেকানোর কথা বলে অনেককেই গোমূত্র পান করিয়েছেন। নিজেই অনেকের মুখে গোমূত্র ঢেলে দিয়েছেন এই বিজেপি নেতা। তার আগে ধুপ-ফুল-ফল-মিষ্টান্নে গরুর পূজা করা হয়। গরু ও বাছুরকে এ সময় রুটি খাওয়ানো হয়।
গরুর পূজায় প্রসাদ হিসেবে লাড্ডুও ছিল। গোমূত্র পান করলে তবেই মিলেছে এ মিষ্টান্ন। বিজেপি নেতার গোমূত্র পান করানো নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে রাজনৈতিক মহলে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। কলকাতার ডেপুটি মেয়র ও তৃণমূল কংগ্রেস নেতা অতীন ঘোষ বলেন, ‘যাদের চিড়িয়াখানায় থাকার কথা, তারা বাইরে থাকলে এই রকমই হয়।’
কংগ্রেস বিধায়ক মনোজ চক্রবর্তী উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘বিজ্ঞানের উল্টো পথে হেঁটে করোনা সংক্রমণ রোখার নামে যেভাবে গোমূত্র পান করানো হচ্ছে, তার ফল ভয়ঙ্কর হতে পারে। গ্রামাঞ্চলের মানুষ যদি দলে দলে গোমূত্র পান করে নতুন কোনও সংক্রমণের শিকার হন, তা হলে কে দায়ী থাকবে?’
পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু অবশ্য এ ঘটনার দায় এড়িয়ে বলেন, ‘ওই কর্মসূচির সঙ্গে বিজেপির কোনও সম্পর্ক নেই। বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব কাউকে এই রকম কোনও কর্মসূচি আয়োজন করতে বলেননি। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও বলেননি যে, করোনা রুখতে গোমূত্র পান করান। যিনি এসব করেছেন, তিনি নিজের দায়িত্বে করেছেন।’