করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে ভারত জুড়ে চলা লকডাউনের মধ্যে দিশেহারা অবস্থায় পড়েছেন সেখানকার শ্রমিক ও শিক্ষার্থীরা। নিজ নিজ শহরে ফেরার অনুমতি পেতে হায়দ্রাবাদের বিভিন্ন থানার সামনে ভিড় করছেন শত শত মানুষ। সামাজিক শিষ্টাচার (সোস্যাল ডিসট্যান্সিং) অমান্য করে লাইনে দাঁড়াচ্ছেন তারা। অন্ধ্রপ্রদেশ- তেলেঙ্গানা সীমান্তেও একই ধরনের ভিড় দেখা গেছে। অন্ধ্র পুলিশের অনুমতি না পাওয়ায় সীমান্তে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে আছে শত শত গাড়ি। দেশটির সম্প্রচারমাধ্যম এনডিটিভি এই খবর জানিয়েছে।
গত মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া এক ভাষণে আগামী ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত টানা ২১ দিন ভারত জুড়ে লকডাউন ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এই সময়ে সবাইকে ঘরে থাকতে বলা হয়েছে। আর সবাইকে ঘরে রাখতে রাস্তায় রাস্তায় টহল জোরালো করেছে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী। বুধবার থেকে শুরু হওয়া সরকারি এই পদক্ষেপে বিড়ম্বনায় পড়েছে দেশটির লাখ লাখ দিনমজুর।
তেলেঙ্গানায় কাজ করা অনেক শ্রমিক এবং শিক্ষার্থী মূলত অন্ধ্রপ্রদেশের বাসিন্দা। এদের অনেকেই বাড়ি ফেরার অনুমতি পেতে তেলেঙ্গানার কুকাটপালি থানার সামনে জড়ো হয়েছে। আবার তেলেঙ্গানা-অন্ধ্র সীমান্তেও অনেকে ভিড় করছেন। ঘটনাস্থলের ভিডিও শেয়ার করে অশোক নামের একজন বলেছেন, ‘বহু শিক্ষার্থী বাড়ি ফেরার চেষ্টা করছেন। সকাল থেকে তারা অপেক্ষায় রয়েছেন কিন্তু অন্ধ্র প্রদেশে প্রবেশের অনুমতি পাচ্ছেন না’। ঘটনাস্থল থেকে এক তরুণ এনডিটিভিকে বলেন, ‘হোস্টেল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এবং খাবার সংগ্রহ কঠিন হয়ে পড়ায় কয়েক দিন ধরেই আমাদের অন্য কোনও উপায় নেই’।
অন্ধ্র প্রদেশের পুলিশ বলছে তেলেঙ্গানা ছাড়ার অনুমতি দেওয়ার বিষয়ে আগে থেকে তাদের কিছু জানানো হয়নি। অন্ধ্র প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর চিফ সেক্রেটারি পিভি রমেশ বলেন, প্রধানমন্ত্রী (নরেন্দ্র মোদি) যখন সবাইকে ঘরে থাকতে বলছেন, তখন তেলেঙ্গানা কিভাবে পাস ইস্যু করছে? এটা তাদেরও কর্তব্য নয় কি? তবে বর্তমানে সীমান্তে জড়ো হওয়াদের প্রবেশের অনুমতি দিয়ে বিষয়টি নিষ্পত্তি করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। তবে পরে কেউ সীমান্তে এলে তাদের আর প্রবেশের সুযোগ দেওয়া হবে না।
এদিকে তেলেঙ্গানার মিউনিসিপ্যাল মিনিস্টার কেটি রামা রাও বলেছেন, হায়দ্রাবাদের হোস্টেলগুলো চালু থাকবে আর সেখানে মানুষ থাকতে পারবে।
তেলেঙ্গানায় নতুন করে দুই করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে রাজ্যটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৪১ জনে পৌঁছেছে। এছাড়া ভারত জুড়ে এতে আক্রান্তের সংখ্যা ৬০৬ জনে পৌঁছেছে। এই ভাইরাসের শিকার হয়ে দেশটিতে মারা গেছে মোট ১৩ জন।