ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে এক ইউপি সদস্যকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগে দু’দল গ্রামবাসীর সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক আহত হয়েছে। মঙ্গলবার (৩১ মার্চ) দুপুরে উপজেলার পাকশিমুল ইউনিয়নের ভুঁইশ্বর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে সরাইল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হয়। পরে জেলাশহর থেকে এক প্লাটুন রিজার্ভ পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ব্যাপক লাঠিপেটা, ২৬ রাউন্ড রাবার বুলেট এবং ১০ রাউন্ড টিয়ারশেল ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সহকারী পুলিশ সুপার (সরাইল সার্কেল) মো. মাসুদ রানা এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
আহতদের সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল এবং জেলার বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিকে ভর্তি ও চিকিৎসা দেওয়া হয়।
এলাকাবাসী ও পুলিশ জানায়, উপজেলার পাকশিমুল ইউনিয়নের পাতার হাটি গ্রামের বাসিন্দা শাহাব উদ্দিন বাথরুমের নোংরা পানি সরাইল-অরুয়াইল সড়কের পাশে ভুঁইশ্বর বাজার সংলগ্ন ফসলি মাঠে ছেড়ে দেন। ওই পানির দুর্গন্ধে রাস্তা দিয়ে লোকজন চলাফেরা করতে সমস্যা হচ্ছিল। মঙ্গলবার সকালে ওই ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের সদস্য মলাই মিয়া শাহাব উদ্দিনের বাড়িতে গিয়ে বিষয়টি জানতে চান। তখন শাহাব উদ্দিনের ছেলে আসাদ উল্লাহ ইউপি সদস্য মলাইকে গালমন্দ করেন। বিষয়টি জানাজানি হলে উত্তরপাড়া ও পাতার হাটির লোকদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে সকাল ১০টায় দুই পাড়ার লোকজন দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। সংঘর্ষে উভয়পক্ষে সহস্রাধিক লোক অংশগ্রহণ নেয়। সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত থেমে থেমে এ সংঘর্ষ চলে। খবর পেয়ে সহকারী পুলিশ সুপারের (সরাইল সার্কেল) নেতৃত্বে সরাইল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউপি সদস্য মলাই মিয়া বলেন, ‘গ্রামের কৃষকদের ফসলি মাঠে যাওয়ার রাস্তায় শাহাবউদ্দিন তার বাড়ির টয়লেটের ময়লা ছেড়ে দিয়েছে। জনপ্রতিনিধি হিসেবে জিজ্ঞেস করতে গেলে শাহাব উদ্দিনের ছেলে আসাদ আমাকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।’
এ ব্যাপারে শাহাব উদ্দিনের ছেলে আসাদ উল্লাহ বলেন, ‘আমি মলাই মিয়াকে গালমন্দ করিনি। আমি শুধু বলেছি ময়লা নয়, পানি যাচ্ছে। এটা রাস্তা নয়, সরকারি খাল।’
সরাইল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. নূরুল হক বলেন, ‘বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।’