মাওলানা সাদ লাপাত্তা, তাকে খুঁজে পাচ্ছে না দিল্লি পুলিশ

ভারতে তাবলিগ জামাতের প্রধান মাওলানা সাদ কান্দহালভি, যিনি মাওলানা সাদ নামেও সুপরিচিত। তিনি গাঢাকা দিয়েছেন এবং তাকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে দিল্লি পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।

মাওলানা সাদের নেতৃত্বাধীন তাবলিগ জামাতের সদর দফতর, দিল্লির মারকাজ নিজামুদ্দিনে অন্তত দুই থেকে তিন হাজার লোক গত কয়েক সপ্তাহ ধরে গাদাগাদি করে ছিলেন। ওই সমাবেশ থেকে ভারতের নানা প্রান্তে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে—এ খবর জানাজানি হওয়ার পরই মাওলানা সাদ আত্মগোপন করেছেন বলে জানা গেছে।

তাবলিগ যখন মার্চের গোড়া থেকে মাঝামাঝি পর্যন্ত ওই জমায়েতের আয়োজন করে, তখন দিল্লিতে পাঁচ জনের বেশি লোককে নিয়ে যেকোনও ধরনের ধর্মীয় বা সামাজিক সভা করা নিষিদ্ধ ছিল। জারি ছিল মহামারি আইনও।

মাওলানা সাদ তথা তাবলিগ জামাত কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কর্তব্যে চূড়ান্ত অবহেলার অভিযোগে ইতোমধ্যে দিল্লি পুলিশ একটি এফআইআর দায়ের করেছে।

তাবলিগ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কঠোরতম শাস্তির সুপারিশ করে দিল্লি সরকারও রাজধানীর লেফটেন্যান্ট গভর্নর অনিল বাইজালের কাছে একটি চিঠি লিখেছে। তাতে দিল্লির স্বাস্থ্যমন্ত্রী লিখেছেন, ‘এই গর্হিত অপরাধের জন্য কোনোভাবেই যেন তাবলিগের নেতাদের ছাড় না-দেওয়া হয়।’

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও বিজেপি নেতা মুখতার আব্বাস নাকভিও একে ‘তালিবানি পাপ’ বলে বর্ণনা করেছেন।

কিন্তু তাবলিগ জামাতের সদর দফতর করোনাভাইরাস ছড়ানোর হটস্পট হিসেবে শনাক্ত হয়েছে, এ খবর নিয়ে ভারতের মিডিয়ায় দিনদুয়েক আগে হইচই শুরু হওয়ার আগেই মাওলানা সাদ দিল্লির নিজামুদ্দিনে তার আস্তানা ছেড়ে চলে যান বলে জানা যাচ্ছে।

দিল্লি পুলিশের একটি পদস্থ সূত্র জানিয়েছে, ‘খুব সম্ভবত ২৮ মার্চ (শনিবার)-এর পর থেকেই মাওলানা সাদ নিজামুদ্দিন ছেড়ে অন্য কোথাও চলে গিয়েছেন। তবে তিনি এই মুহূর্তে দিল্লিতে নাকি শহরের বাইরে, তা আমরা নিশ্চিত নই।’

সর্বভারতীয় দৈনিক টাইমস অব ইন্ডিয়ার সংবাদদাতা রাজশেখর ঝাও দিল্লি পুলিশকে উদ্ধৃত করে টুইট করেছেন—‘মাওলানা সাদ কান্দহালভির কোনও খোঁজ মিলছে না।’

প্রসঙ্গত, ভারতে তাবলিগের প্রধান সাদ কান্দহালভির কিছু বিতর্কিত মতবাদকে কেন্দ্র করেই বাংলাদেশেও তাবলিগ জামাত কার্যত দুভাগ হয়ে গেছে।

গত কয়েক বছর ধরে ঢাকার কাছে টঙ্গীতে তুরাগ-তীরের বিশ্ব ইজতেমা যে দুটি পর্বে আয়োজন করতে হচ্ছে, তার মূলেও আছে এই একই বিরোধ। বিশ্ব ইজতেমার একটি পর্বের আয়োজকরা মাওলানা সাদের অনুসারী ও অন্য পর্বের আয়োজকরা তার বিরোধী বলেই পরিচিত।

বছর দুয়েক আগে বিশ্ব ইজতেমায় যোগ দিতে বাংলাদেশে গিয়েও মাওলানা সাদ শেষ পর্যন্ত টঙ্গীতে যেতে পারেননি। তাকে সেবার বাংলাদেশ সরকারের হস্তক্ষেপে ঢাকা এয়ারপোর্ট থেকেই ভারতে ফিরে আসতে হয়।

এখন করোনাভাইরাস সংকটের সময় চূড়ান্ত দায়িত্বজ্ঞানহীনতা দেখানোর অভিযোগে তাকেই দিল্লি পুলিশ খুঁজছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *