রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরী এলাকা মৃত অবস্থায় উদ্ধার রুবাইয়াত শারমিন ওরফে রুম্পার মরদেহের ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন দুই-একদিনের মধ্যেই জমা দেওয়া হবে। তবে হত্যাকাণ্ডের তিনদিন পেরিয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত কাউকে আটক কিংবা কোনো ক্লু বের করা যায়নি।
পুলিশ বলছে, মরদেহ শনাক্তের পর এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে আশপাশের ভবনের সিসি টিভি ফুটেজসহ কয়েকটি বিষয়কে সামনে রেখে তদন্ত চলছে। অচিরেই বিশ্ববিদ্যালয়ছাত্রী রুম্পা হত্যার ক্লু বেরিয়ে আসবে।
বুধবার (০৪ ডিসেম্বর) রাত পৌনে ১১টার দিকে সিদ্ধেশ্বরী সার্কুলার রোডের আয়েশা শপিং কমপ্লেক্সের পেছনের দুই ভবনের মাঝে এক তরুণীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
তাৎক্ষণিকভাবে মৃতদেহ দেখে আশেপাশের লোকজন কেউ চিনতে না পারায়, শনাক্তের জন্য নিহতের ফিঙ্গারপ্রিন্ট সংগ্রহ করে পুলিশ।
ঘটনার পরদিন অর্থাৎ বৃহস্পতিবার (০৫ ডিসেম্বর) থানায় গিয়ে নিহতের ছবি দেখে স্বজনেরা মরদেহ শনাক্ত করেন যে, তিনি বেসরকারি স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশের ইংরেজি বিভাগের ছাত্রী।
তার বাবা হবিগঞ্জের একটি পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক। বাবা হবিগঞ্জে থাকলেও মা ও পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে ঢাকায় থাকতেন রুম্পা।
পড়ুন>>সিদ্ধেশ্বরীতে উদ্ধার হওয়া তরুণী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী
এ ঘটনায় এখনও কোনো ক্লু বের করতে পারেনি পুলিশ। তবে দুই-একদিনের মধ্যেই ময়নাতদন্তের প্রাথমিক প্রতিবেদন দেওয়ার কথা জানিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের চিকিৎসকেরা।
ঢামেক-এর ফরেনসিক বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল মাহমুদ জানান, আমরা দুই-একদিনের মধ্যেই রুম্পার মরদেহের ময়নাতদন্তের প্রাথমিক প্রতিবেদন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করবো।
‘ময়নাতদন্তের সময় আমরা যা যা পেয়েছি-তা ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হবে।’
তবে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন পেতে কিছু সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন তিনি। তার ভাষ্য, ময়নাতদন্তের সময় নিহতের শরীর থেকে হাইভেজেনাল সপ সংগ্রহ করা হয়েছে মৃত্যুর আগে তিনি ধর্ষিত হয়েছিলেন কি না! এছাড়া ভিসেরা সংগ্রহ করা হয়। সেসব পরীক্ষার প্রতিবেদন আসতে একটু দেরি হয়। সেগুলো হাতে পেলে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, রুম্পার মৃত্যুর ঘটনায় আমাদের টিম রাতদিন কাজ করছে। নিহতের পরিবারের লোকজন ও আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে কথা বলে এবং আশপাশের ভবনের সিসিটিভি ফুটেজও সংগ্রহ করা হয়েছে।
‘এখনো কিছুই বলার সময় আসেনি। আশা করছি অতি শিগগির এই ঘটনার বিস্তারিত আপনাদের জানাতে পারবো,’ যোগ করেন তিনি।
এদিকে স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশের ইংরেজি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী রুম্পার মরদেহ উদ্ধার হওয়ার ঘটনায় দ্বিতীয়দিনের মতো বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা।
ওই ইউনিভার্সিটির রাজধানীর ধানমন্ডি ও সিদ্ধেশ্বরী ক্যাম্পাসে আয়োজিত মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলে এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার এবং বিচারের দাবি জানানো হয়েছে।