নতুন এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বেতন-ভাতা ছাড়ের নির্দেশনা ছুটির পর পরই দেওয়া হবে। সবকিছু প্রস্তুত করা হয়েছে, তাই বেতন-ভাতা পাওয়ার ক্ষেত্রেও কোনও অনিশ্চয়তা নেই বলে জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
বাজেট প্রস্তুতির আগে এমপিও ছাড়ের আদেশ জারি না হওয়ায় বেতন-ভাতা পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েন শিক্ষক-কর্মচারীরা। শিক্ষক-কর্মচারী সংগঠনগুলো এমপিও ছাড়ের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বানও জানায়। তবে শিক্ষকদের এমপিও ছাড়ের নির্দেশনা পরে হলেও বেতন-ভাতা নিয়ে কোনও অনিশ্চয়তা নেই বলে জানায় মন্ত্রণালয়।
জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, ‘আমরা সব প্রস্তুত রেখেছি। দুর্যোগ সময়ে সরকারি ছুটি থাকায় নির্দেশনা দেওয়া যাচ্ছে না। তবে ছুটি শেষ হলেই এমপিও ছাড়ের নির্দেশনা জারি হবে।’
বেতন-ভাতা নিয়ে কোনও অনিশ্চয়তা তৈরি হবে কিনা জানতে চাইলে মো. মাহবুব হোসেন বলেন, ‘সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী যেদিন থেকে বেতন-ভাতা পাওয়ার কথা, সেদিন থেকেই নতুন এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা বেতন পাবেন, বেতন ছাড়ের আদেশ যখনই হোক।’
দীর্ঘ ১০ বছর বন্ধ থাকার পর গত বছর ২৩ অক্টোবর একযোগে দুই হাজার ৭৩০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত করে তালিকা প্রকাশ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এরপর ওই বছরের ১২ নভেম্বর ছয়টি এবং ১৪ নভেম্বর একটি প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করা হয়। নতুন এমপিও পাওয়া এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা গত বছর (২০১৯) জুলাই থেকে নির্ধারিত বেতন-ভাতা পাবেন।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতে নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিপরীতে মাউশি, মাদ্রসা শিক্ষা অধিদফতর ও কারিগরি শিক্ষা অধিদফতরে এমপিও ছাড়ের নির্দেশনা পাঠানোর প্রস্তুতি ছিল। তবে যাচাই-বাছাইয়ে সময় নষ্ট হওয়ায় প্রস্তুতি শেষ করতে মার্চ মাসের শেষ সময় পর্যন্ত কাজ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এরইমধ্যে করোনাভাইরাসের প্রকোপে সরকার দুই দফা সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে। আগামী ৯ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি রয়েছে। এরপর দুই দিন সাপ্তাহিক ছুটি। সেই হিসেবে ১২ এপ্রিল থেকে সরকারি অফিস-আদালত খোলার কথা রয়েছে।
গত বছর ২৩ অক্টোবর দুই হাজার ৭৩০টি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিও পেয়েছে। এর মধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অধীন স্কুল ও কলেজ রয়েছে এক হাজার ৬৫১টি। নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় (ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি) ৪৩৯টি, মাধ্যমিক স্তরের ৯৯৪টি, উচ্চ মাধ্যমিক স্তর (স্কুল অ্যান্ড কলেজ) ৬৮টি, কলেজ (একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণি) ৯৩টি এবং স্নাতক কলেজ ৫৬টি।
কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের অধীন রয়েছে এক হাজার ৭৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এরমধ্যে দাখিল মাদ্রাসা ৩৫৭টি, আলিম স্তর ১২৮টি, ফাজিল স্তর ৪২টি, কামিল স্তর ২৯টি, এইচএসসি (বিএম) স্তর ২৮৩টি, কৃষি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ৬২টি, এসএসসি ভোকেশনাল ১৭৫টি স্তরের। এরপর গত বছর ১২ নভেম্বর ৬টি কলেজ ও একটি স্কুল এবং ১৪ নভেম্বর মানিকগঞ্জ সদরের রমজান আলী কলেজকে নতুন করে এমপিওভুক্ত করা হয়। সব মিলিয়ে মোট দুই হাজার ৭৩৭টি প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হয়।