জ্বর, শ্বাসকষ্ট ও বুকে ব্যথা নিয়ে কুড়িগ্রাম শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী জুবাইদুল ইসলামের (৩০) মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে দেখা দিয়েছিল বিভ্রান্তি। ধারণা করা হচ্ছিল তিনি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন। তবে বিভ্রান্তির অবসান হয়েছে। তার নমুনা পরীক্ষার ফলাফল এসেছে নেগেটিভ, অর্থাৎ তিনি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত নন।
বৃহস্পতিবার (০৯ এপ্রিল) কুড়িগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. হাবিবুর রহমান বলেন, উপ-সহকারী প্রকৌশলী জুবাইদুল ইসলাম করোনা আক্রান্ত ছিলেন না। রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্যবিভাগ জানিয়েছে, তার নমুনা পরীক্ষার ফল এসেছে নেগেটিভ।
এর আগে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে কুড়িগ্রাম জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহজাহান আলী জানান, বুধবার (০৮ এপ্রিল) দিনগত রাতে জ্বর ও বুকে ব্যথা নিয়ে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জুবাইদুলকে ঢাকায় পাঠানো হলে পথিমধ্যে তার মৃত্যু হয়। তার হার্টে ফুটো ছিল। একইসঙ্গে তার শরীরে ডেঙ্গুর উপসর্গ দেখা দিয়েছিলো বলে চিকিৎসক ও পরিবারের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে।
কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন কনসালট্যান্ট ডা. মাঈনুদ্দিন জানান, সোমবার (০৬ এপ্রিল) জ্বর ও বুকে ব্যথা নিয়ে তিনি আমার চেম্বারে আসেন। তিনি এবং তার স্ত্রী জানান, তিনদিন ধরে তার জ্বর ও বুক ব্যথা। তার রক্তের প্লাটিলেট ৯৮ হাজারের নিচে থাকায় সন্দেহ করা হয় তিনি ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত ছিলেন। এছাড়া তার হার্ট জন্মগতভাবে ফুটো থাকায় জটিলতা দেখা দেওয়ায় ইকো ও ডেঙ্গু টেস্টসহ ব্যবস্থাপত্র দেওয়া হয়।
জুবাইদুলের স্ত্রী জুই আক্তার জানান, বিয়ের পর তিনি জানতে পারেন তার স্বামীর হার্টে জন্মগত ফুটো থাকায় বুকের ব্যথার সমস্যাটি হতো। গত সোমবার চিকিৎসক তার স্বামীর ইকো টেস্টসহ ডেঙ্গু টেস্ট করার পরামর্শ দেন। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে বুধবার সকালে (০৮ এপ্রিল) রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করেন।
কুড়িগ্রাম মজিদা ডিগ্রি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ও কুড়িগ্রাম পৌরসভার বাসিন্দা সিদ্দিকুর রহমান জানান, প্রায় ৬ মাস ধরে প্রকৌশলী জুবাইদুল ইসলাম তার বাসায় ভাড়া ছিলেন। তার মৃত্যু নিয়ে ফেসবুকে বিভ্রান্তিকর তথ্য পরিবেশন করায় এলাকায় করোনার আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স অব বাংলাদেশ কুড়িগ্রাম জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক বকুল সাহা জানান, উপ-সহকারী প্রকৌশলী জুবাইদুল ইসলাম তিন বছর আগে কুড়িগ্রাম শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে যোগদান করেন। বুধবার রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে বিকেলে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিলে পথিমধ্যে রাতে তার মৃত্যু হয়। বৃহস্পতিবার (০৯ এপ্রিল) দুপুরে রাজশাহীর বাগমারায় পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।