এই মুহূর্তে বিশ্বের যে কোনো দেশের চেয়ে বেশি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যে। শুধু বৃহস্পতিবারই আরও ১০ হাজার কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১ লাখ ৫৯ হাজার ৯৩৭।
শুক্রবার (১০ এপ্রিল) আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ তথ্য জানায়।
যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি কোভিড-১৯ রোগী রয়েছেন। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত (০৯ এপ্রিল) দেশটিতে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৪ লাখ ৬২ হাজার এবং মৃত্যু হয়েছে ১৬ হাজার ৫শ’ জনের। এরপর সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত রোগী রয়েছেন স্পেন (১ লাখ ৫৩ হাজার) এবং ইতালিতে (১ লাখ ৪৩ হাজার)।
ভাইরাসটির উৎসস্থল চীনে শনাক্ত হয়েছেন ৮২ হাজার জন। বিশ্বজুড়ে শনাক্ত কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ১৬ লাখ এবং এ রোগে মারা গেছেন ৯৫ হাজার মানুষ।
সবচেয়ে বেশি রোগী নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যে থাকলেও মৃত্যুর দিক থেকে এগিয়ে আছে যথাক্রমে ইতালি (১৮ হাজার) এবং স্পেন (১৫ হাজার ৫শ’)। নিউইয়র্কে মারা গেছেন ৭ হাজার জন, যা চীনের চেয়ে বেশি। চীনে মৃত্যু হয়েছে ৩ হাজার ৩শ’ জনের।
অঙ্গরাজ্যটিতে গণকবরে একইসঙ্গে অনেক মরদেহ দাফন করতে দেখা গেছে। ড্রোন থেকে তোলা ছবিতে দেখা গেছে, দাফনকাজের সঙ্গে জড়িত কর্মীরা বিশেষ সুরক্ষা পোশাক পরে মইয়ের সাহায্যে বিশাল কবরে নেমে একই সঙ্গে অসংখ্য কফিন গাদা করে রাখছেন।
ছবিগুলো তোলা হয়েছে হার্ট আইল্যান্ডে অবস্থিত ১৫০ বছরের পুরনো এক গণকবর থেকে। আত্মীয়-স্বজন নেই বা পরিবারের শেষকৃত্য করার সামর্থ্য নেই, এমন রোগী দাফন করা হতো সেখানে।
দাফন কার্যক্রম সপ্তাহে একদিনের জায়গায় পাঁচদিন করতে হচ্ছে। সাধারণত রাইকার্স আইল্যান্ডের কয়েদিরা এ কাজ করেন কিন্তু কাজের চাপ বাড়তে থাকায় ঠিকাদারদের এ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
হোয়াইট হাউসের করোনা ভাইরাস টাস্ক ফোর্সের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ডক্টর অ্যান্থনি ফসি বলেন, ‘কোভিড-১৯ মহামারিতে ৬০ হাজার মার্কিন নাগরিক মারা যেতে পারে।’
তবে মার্চ মাসের শেষেরদিকে তিনি বলেছিলেন, ‘আনুমানিক এক থেকে দুই লাখ মানুষের মৃত্যু হতে পারে।’ এর আগে হোয়াইট হাউস জানিয়েছিল, প্রতিরোধের জন্য যথাযথ উদ্যোগ না নিলে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ২২ লাখ মানুষ মারা যেতে পারে। ফলে দেশটির ৪২টি অঙ্গরাজ্যে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষকে বাড়িতে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এতে গত তিন সপ্তাহে দেশটিতে বেকার হয়ে পড়েছেন ১ কোটি ৬৮ লাখ মানুষ।
এ মহামারির মধ্যেও যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক ও অস্ত্রের দোকান এবং ধর্মীয় অনুষ্ঠানসহ চার্চের কার্যক্রম বন্ধ থাকবে কিনা, এনিয়ে আইনি লড়াই অব্যাহত রয়েছে।