নারায়ণগঞ্জে করোনা আক্রান্ত হয়ে প্রতি ৮ জনের একজন মারা যাচ্ছেন। গত এক মাসে আক্রান্তের সংখ্যা ও মৃত্যুর সংখ্যা থেকে এ পরিসংখ্যান পাওয়া যায়। যদিও জেলায় ইতোমধ্যে তিনজন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন কিন্তু সেটি জেলাকে করোনার হটস্পট ঘোষণার আগে। ১ এপ্রিলের পর জেলায় নতুন করে কারো সুস্থ হওয়ার সংবাদ নেই।
সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর), জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ, জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইমতিয়াজ ও জেলা করোনা বিষয়ক প্রতিনিধি ডা. জাহিদুল ইসলাম থেকে প্রাপ্ত তথ্য থেকে এ পরিসংখ্যান পাওয়া যায়।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জেলায় এখন পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭৭ জনে। এদের মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৩ জন ও মারা গেছেন ৯ জন।
গত ৩০ মার্চ নারায়ণগঞ্জ বন্দরের রসুলবাগ এলাকায় প্রথমবারের মতো করোনা আক্রান্ত এক নারী মারা যান। পরে গত ৪ এপ্রিল আরও এক করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু হয় বাংলাবাজার এলাকায়। এরপর ৫ এপ্রিল শহরের জামতলা এলাকায় একজন ও দেওভোগ আখড়া এলাকায় আরেকজনের মৃত্যু হয়। ৬ এপ্রিল শহরের শীতলক্ষ্যা এলাকায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। ৬ এপ্রিল রাতে শহরের চাষাঢ়ার মাসুদা প্লাজার মালিক করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। ৭ এপ্রিল শহরের দেওভোগ এলাকায় গিটারিস্ট করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যান। ৮ এপ্রিল সিদ্ধিরগঞ্জ উপজেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে আদমজী আঞ্চলিক শ্রমিক লীগের সহ-সভাপতি মারা যান এবং ৯ এপ্রিল ফতুল্লার সস্তাপুরে করোনায় আক্রান্ত হয়ে এক ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়।
এর আগে ৫ এপ্রিল জেলায় নতুন করে ৬ জন ও ৬ এপ্রিল নতুন করে ১২ জন আক্রান্তের সংবাদ জানিয়েছিলেন সিভিল সার্জন। ৭ এপ্রিল জেলায় নতুন করে ১৫ জন আক্রান্ত হিসেবে শনাক্তের কথা জানায় আইইডিসিআর। ৮ এপ্রিল জেলায় ৩ জন ও ৯ এপ্রিল ১৩ জন আক্রান্ত হওয়ার সংবাদ জানান সিভিল সার্জন। ১০ এপ্রিল ১৬ জন আক্রান্তের সংবাদ জানায় আইইডিসিআর।
তারও আগে গত ৮ মার্চ এ জেলায় ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হিসেবে ২ জনকে চিহ্নিত করে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)। তারা ইতোমধ্যেই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। পরে ২৩ মার্চ জেলায় আরো একজন আক্রান্ত পাওয়া যায় বলে জানিয়েছিলেন জেলা সিভিল সার্জন। ওই ব্যক্তিও গত ১ এপ্রিল সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরেন।
প্রায় প্রতিদিনই আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে এ জেলায়। ৮ এপ্রিল থেকে পুরো জেলা লকডাউন ঘোষণা করার পরও কোনোভাবেই সংক্রামণ ঠেকানো যাচ্ছে না। ইতোমধ্যে জেলা সিভিল সার্জন জানিয়েছেন জেলায় এখন আর প্রবাসীদের প্রয়োজন হচ্ছে না লোকাল কমিউনিটি ট্রান্সমিশনেই এই ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে।
এদিকে বৃহস্পতিবার (৯ এপ্রিল) রাতে দ্রুত নারায়ণগঞ্জে করোনা টেস্টের ল্যাব স্থাপনের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে অনুরোধ করেছেন নারায়ণগঞ্জ ৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান।