বিমানবন্দরে ইয়াবাসহ রোহিঙ্গা পরিবার আটক

ঢাকা: হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইয়াবা বহনের দায়ে ছয় সদস্যের একটি রোহিঙ্গা পরিবারকে আটক করেছে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাদের আটক করা হয়।

শুক্রবার (০৩ নভেম্বর) বিকেলে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জিয়াউল হক এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, গতকাল সন্ধ্যা সাতটায় বেসরকারি এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে করে কক্সবাজার থেকে ঢাকায় অবতরণ করে পরিবারটি।

অবতরণের পর এয়ারপোর্ট এপিবিএনের গোয়েন্দা দলের সন্দেহ হলে নজরদারিতে পড়েন তারা। এ সময় তাদের আটক করে এয়ারপোর্ট এপিবিএন অফিসে নিয়ে আসা হয়।
তৎক্ষণাৎ তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তারা ইয়াবা বহন বা কোনো ধরনের অপরাধে জড়িত থাকার কথা সম্পূর্ণ অস্বীকার করেন। নিজেদেরকে তারা একটি বাঙালি পরিবার হিসেবেও দাবি করেন।
কিন্তু পুলিশের সন্দেহ হয় পরিবারটি ইয়াবা পাচারের সঙ্গে জড়িত। এই সন্দেহ যাচাই করতে পরিবারের চার সদস্যকে বিমানবন্দর সংলগ্ন উত্তরার একটি প্যাথলজি সেন্টারে পরীক্ষা করার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় ডাক্তারি পরীক্ষায় শিশু মো. রুবেল (১৫), তার ফুফু আছিয়া বেগম (২৫) এবং তার চাচী জোহুরা বেগমের (৩০) পাকস্থলীতে অস্বাভাবিক বস্তুর উপস্থিতি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়। এরপর তারা আরও জোরদার জিজ্ঞাসাবাদের মুখে স্বীকার করেন যে তারা পাকস্থলীতে ইয়াবা বহন করছেন।

জিয়াউল হক আরও জানান, ইয়াবা বহনের বিষয়ে স্বীকারোক্তি দেওয়ার পর তাদের জাতীয়তা নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তারা নিজেদের রোহিঙ্গা বলেও স্বীকার করেন। ছয় সদস্যের এই পরিবারের ইয়াবা বহনের মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন সঙ্গে থাকা আছিয়া বেগমের স্বামী আলী আহমদ (২৮)। এ সময় আছিয়া বেগমের দুগ্ধপোষ্য শিশু উমায়ের হোসেন (৭ মাস) এবং জহুরা বেগমের দুগ্ধপোষ্য শিশু উম্মে ছালমাও (১০ মাস) সঙ্গে ছিল।

জাতীয়তা ও ইয়াবা বহনের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর রাতেই তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজে নিয়ে যায় এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের একটি দল। সেখানে উল্লেখিত তিন রোহিঙ্গা নাগরিকের পাকস্থলী থেকে ডাক্তারের তত্ত্বাবধানে মোট ১৩০টি ইয়াবা ট্যাবলেটের প্যাকেট উদ্ধার করা হয়। এসব প্যাকেট গণনা করে সেখানে মোট ছয় হাজার ২৭৫টি ইয়াবা ট্যাবলেট পাওয়া যায়। শিশু মো. রুবেলের পাকস্থলীতে ৪০ প্যাকেটে মোট এক হাজার ৯৩০টি, আছিয়ার পাকস্থলীতে ৫২ প্যাকেটে মোট দুই হাজার ৫১১টি এবং জহুরা বেগমের পাকস্থলীতে ৩৮ প্যাকেটে এক হাজার ৮৩৪টি ইয়াবা ট্যাবলেট পাওয়া যায়।

অভিযুক্ত সবাই মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিক। সবাই কক্সবাজার টেকনাফের লেদা ক্যাম্পের অধিবাসী বলে জানা গেছে। তাদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে বিমানবন্দর থানায় মামলা দায়ের করা হচ্ছে বলেও জানান জিয়াউল হক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *