শিশু শিক্ষার্থীকে আছাড় দিয়ে মেরুদণ্ডের হাড় ভেঙে দিলেন শিক্ষক

মাদারীপুর: মাদারীপুরে ফায়েজ হাওলাদার নামে ৮ বছর বয়সী এক মাদরাসা ছাত্রকে বেদম মারধরের অভিযোগ উঠেছে ওই মাদরাসার শিক্ষকের বিরুদ্ধে। মারধরের একপর্যায়ে শিশুটিকে তুলে আছাড় দেওয়া হলে তার মেরুদণ্ডের হাড় ভেঙে যায়।

বর্তমানে শিশুটি রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
গত সোমবার (৬ নভেম্বর) ঘটনা ঘটলেও বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) সকালে ঘটনাটি জানাজানি হয়।

আহত ফায়েজ হাওলাদার মাদারীপুর সদর উপজেলার নয়াচর গ্রামের সবুজ হাওলাদারের ছেলে। অভিযুক্ত শিক্ষক মাহাদী হাসান চরমুগরিয়া এলাকার জামিয়া কাসেমিয়া রওতুল উলুম ক্যাডেট কেয়ার মাদরাসার নুরানী শিক্ষক।

জানা গেছে, গত সোমবার ভোরে মাদারীপুর সদর উপজেলার চরমুগরিয়া এলাকার জামিয়া কাসেমিয়া রওতুল উলুম ক্যারেট কেয়ার মাদরাসার নাযেরা বিভাগের শিক্ষার্থী ফায়েজকে ঘুম থেকে শ্রেণিকক্ষে ডেকে নেন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক মাহাদী হাসান। এ সময় ফায়েজকে শ্রেণিকক্ষে উঠে দাঁড়াতে বলেন তিনি।

শিক্ষকের কথা মতো না দাঁড়িয়ে, ঘুমিয়ে পড়ে শিশুটি। এতে রাগান্বিত হয়ে ফায়েজকে বেত্রাঘাত করেন মাহাদী হাসান। একপর্যায়ে ফায়েজকে তুলে আছাড় দেন। বিষয়টি কাউকে বললে মেরে ফেলার হুমকিও দেন অভিযুক্ত শিক্ষক।
পরদিন মঙ্গলবার ফায়েজ অসুস্থ হয়ে পড়লে ভর্তি করা হয় জেলা সদর হাসপাতালে। পরে জানানো হয় স্বজনদের। বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ধরা পড়ে শিশুটির মেরুদণ্ডের হাড় ভেঙে গেছে। বুধবার রাতে তাকে রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন চিকিৎসক। শিশুটি সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারছে না।

ফায়েজের মামা সাহাবুদ্দিন বেপারী বলেন, মাদরাসায় ছেলে বা মেয়েকে কিছু শেখানোর জন্য পাঠানো হয়। কিন্তু মাহাদী হাসান যে কাজটি করেছেন এর বিচার হওয়া দরকার। ৮ বছরের শিশুর সঙ্গে এমন অত্যাচার কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।

শান্ত ইসলাম নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, শিক্ষক মাহাদী ইসলাম নরপশুর মতো কাজ করেছে। আমরা এই মাদরাসা বন্ধের পাশাপাশি তার বিচার চাই।

মাদরাসার শিক্ষার্থী তাজিম, ইমরান খান, রফিকুল ইসলামসহ বেশ কয়েকজন জানায়, হঠাৎ রেগে গিয়ে ফায়েজের ওপর এমন অত্যাচার করেছেন শিক্ষক মাহাদী ইসলাম। ফায়েজকে তুলে আছাড় দেওয়ার পাশাপাশি লাথিও দেন তিনি। আমাদের বন্ধুকে ভয়ও দেখানো হয়েছে।

শিশুটির মা শ্যামলী আক্তার বলেন, আমার ছেলেকে অত্যাচার করেও থামেনি। কাউকে বিষয়টি জানালে মেরে ফেলার হুমকিও দেন ওই শিক্ষক। এ ঘটনার বিচার চাই আমরা।

মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মাসুদ আলম খান জানান, বিষয়টি এরই মধ্যে জেলা পুলিশের নজরে এসেছে। ঘটনা তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে এ ব্যাপারে অভিযুক্তসহ মাদরাসা সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *