মৌলভীবাজার: মৌলভীবাজার ২৫০ বিশিষ্ট সদর হাসপাতালে নার্সের অবহেলায় আমিনা আক্তার (২৬) নামে এক নারীর নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন এক ভোক্তভোগী।
সোমবার (১৩ নভেম্বর) সকালে এ ঘটনা ঘটে।
রাজনগর উপজেলার গবিন্দবাটি এলাকার মৃত নবজাতকের বাবা সেলিম মিয়া অভিযোগ করেন, তার স্ত্রী আমিনা আক্তারকে ১২ নভেম্বর ডেলিভারির জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মধ্যরাতে তার প্রসবব্যাথা শুরু হলে তারা সেখানে দ্বায়িত্ব পালন করা সিনিয়র নার্স নার্গিস আক্তারকে ডাকতে গিয়ে ঘুমন্ত অবস্থায় পান।
অন্যান্য নার্সরা মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। সিনিয়র নার্স নার্গিস আক্তার তাদের সময় বাকি আছে বলে বিদায় করে দেন।
প্রসবকালীন জটিলতা দেখা দিলে আবারও রোগীর সঙ্গে থাকা রত্না বেগম গিয়ে সিনিয়র নার্স নার্গিস আক্তারকে আসার জন্য অনুরোধ করেন। তিনি তখন রোগীকে হাঁটানোর পরামর্শ দেন।
কিছু সময়ের মধ্যে আমিনা আক্তার মৃত সন্তান প্রস্রব করেন।
নবজাতক মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে সেখানে থাকা আত্নীয়-স্বজনরা উত্তেজিত হয়ে উঠলে কর্তৃপক্ষ পুলিশে খবর দেন। এ সময় পুলিশ পাহারায় নার্স নার্গিস আক্তারকে নিরাপদে বাসায় পাঠানো হয়।
প্রসূতি বিভাগের ৪২ নম্বর বেডের জেরিন আক্তার, ৪৩ নম্বর বেডের শিউলি আক্তার, ৪৪ নম্বর বেডের রুপালী বেগম ও ৪৬ নম্বর বেডের রোহিনা বেগম জানান, প্রসব বেদনায় আমিনা আক্তারকে ছটফট করতে দেখেছি। নার্স বা ডাক্তার কেউ কাছে আসেননি। পরবর্তীতে আমিনা বেগম কোনো নার্স বা ডাক্তার ছাড়াই মৃত সন্তান প্রসব করেন। তারা সবাই প্রসূতি। এক-দুই দিন বা কিছু সময় আগে তাদের ডেলিভারি হয়েছে। তারা প্রত্যেকেই নার্স বা ডাক্তার সংকটে ভুগেছেন বলেও জানিয়েছেন।
মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক কর্মকর্তা ডা. বিনেন্দ্র ভৌমিক বলেন, ডেলিভারির আগে বাচ্চার অবস্থা স্বাভাবিক ছিল। ডেলিভারির সময় নবজাতকের শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। আর বাচ্চাকে তো টেনে হিঁছড়ে বের করা যায় না। ডেলিভারির সময় অনেক ক্ষেত্রে মা ও নবজাতক দুইজনেরই মৃত্যু হয়। এক্ষেত্রে মা তো বেঁচে আছেন। তারপরও পুনরায় বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।