ঢাকা: ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক অনেক মজবুত। দুই দেশের মধ্যকার স্মৃতিও অনেক।
দুই দেশের লোকজন পরস্পর পরস্পরকে ভালোবাসে। সবাই এক হয়ে থাকতে চায়।
দুই দেশের মধ্যে সীমারেখা আছে, তবে বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ে কোনো সীমারেখা নাই। এমন মন্তব্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের।
বুধবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশকে ভারতের স্বীকৃতির ৫২ বছর পূর্তি’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব মন্তব্য করেন। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা (অব.) লেফটেন্যান্ট কর্নেল কাজী সাজ্জাদ আলী জহির (বীর প্রতীক)।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারতে সাথে আমাদের যুদ্ধের অনেক স্মৃতি আছে। দেশটির সাথে আমাদের সম্পর্ক চির অটুট থাকবে। আমাদের বাউন্ডারিতে সীমারেখা আছে, কিন্তু আমাদের হৃদয়ে কোনো সীমারেখা নাই। আমরা সবাই সবাইকে ভালোবাসি। আমরা এক হয়ে থাকতে চাই সবার সুখে-দুঃখে।
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় আমাদের কাছে তখন কোনো ওয়ারলেস বা যানবাহন ছিল না। আমাদের যোগাযোগের উপায় ছিল শুধু একে অন্যের সাথে কথা বলা। অন্য কিছু ছিল না। আমরা পরের দিন বাঁচব কি মরবো সেটাও সুনিশ্চিত ছিল না। আমরা যারা তখন দেশের মধ্যে ছিলাম এভাবেই যুদ্ধ করেছি। জীবন বাঁচাতে ভারতে আমাদের শরণার্থীরা সে সময় আশ্রয় নিয়েছিল। সকালে শরণার্থী শিবিরে যদি এক হাজার লোক থাকতো; সন্ধ্যায় হয়ে যেত দুই আড়াই হাজার, ৩ হাজার। এরকম অবস্থায় ভারত সরকার সব ধরনের সহযোগিতায় মানুষগুলোকে বাঁচিয়ে রেখেছিল।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ২০১৭ সালে যখন রোহিঙ্গারা একইভাবে তাদের দেশ (মিয়ানমার) থেকে বিতাড়িত হচ্ছিল, লাখো মানুষ কেউ সাঁতরে, কেউ নৌকায় বর্ডার দিয়ে চলে আসছিল। তখন প্রধানমন্ত্রীকে আমরা জিজ্ঞেস করলাম, আমরা কি তাদের (রোহিঙ্গাদের) আসতে দেব? শেখ হাসিনা তখন বললেন, ‘তোমরা কি ভুলে গেছ জীবন রক্ষার জন্য বন্ধু দেশ ভারতে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলে? এক কোটির মত মানুষ, তোমরা আশ্রয় নিয়েছিল সেটা কি ভুলে গিয়েছিলে?’ ভারতে আমরা যেভাবে গিয়েছিলাম ঠিক একই চিত্র মিয়ানমারে দেখি।
ড. খন্দকার বজলুল হকের সভাপতিত্বে সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার শ্রী প্রণয় কুমার ভার্মা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন অর রশিদ, অধ্যাপিকা ড. নাসরিন আহমেদ, সাবেক রাষ্ট্রদূত সোহরাব হোসেন।