ফ্যান কারখানায় আগুনে নিহতদের মরদেহ হস্তান্তর

গাজীপুর সদর উপজেলার বাড়িয়া ইউনিয়নের কেশরিতা এলাকায় লাক্সারি ফ্যান কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে নিহত ১০ জনের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) দুপুর ১টার দিকে মরদেহগুলো নিহতদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর প্রক্রিয়া শুরু হয়। গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শাহীনুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে রোববার (১৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ওই কারখানায় আগুন লেগে ১০ শ্রমিক নিহত হয়।

গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শাহীনুল ইসলাম জানান, ঘটনার পর মরদেহগুলো গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়। দগ্ধ ও ধোঁয়ায় কালো হয়ে যাওয়ায় মরদেহ শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। এক পর্যায়ে ডিএনএ পরীক্ষা করে মরদেহ শনাক্ত করা হয়। পরে দুপুরে ১০ জনের মরদেহ তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। দাফনের জন্য প্রত্যেক মরদেহের পরিবারকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে।

নিহতরা হলেন- গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মার্তা এলাকার নজরুল ইসলামের ছেলে শামীম (২৬), একই উপজেলার প্রহলাদপুর এলাকার কামাল হোসেনের ছেলে রাশেদ (২০), গাজীপুর সদর উপজেলার কালনি এলাকার সাইফুল ইসলামের ছেলে ফয়সাল (২১), একই উপজেলার কেশরিতা এলাকার বীরবলের ছেলে উত্তম (২০), গাজীপুর সিটি করপোরেশনের আতারকুল এলাকার লাল মিয়ার ছেলে পারভেজ (২৫), রংপুরের তাইজুদ্দিনের ছেলে ফরিদ (১৫), ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর  থানা এলাকার মোরশেদ মিয়ার ছেলে ইউছুব (২৬), নরসিংদীর বেলাব থানার চর কাশিনগর এলাকার মাজু মিয়ার ছেলে সজল (২০), দিনাজপুরের বীরগঞ্জ থানার দাউদকান্দি এলাকার আব্দুল হামিদের ছেলে লিমন (২২) ও ময়মনসিংহের কোতুয়ালি থানার সম্পাগঞ্জ এলাকার সেলিম মিয়ার ছেলে তরিকুল ইসলাম (২০)।

গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক মো. মামুনুর রশিদ জানান, গাজীপুর সদর উপজেলার কেশরিতা এলাকায় লাক্সারি ফ্যান কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে জয়দেবপুর ফায়ার সার্ভিসের ৩টি ইউনিট কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নেভায়। পরে কারখানার তৃতীয় তলা থেকে ১০ শ্রমিকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তবে আগুনের সূত্রপাত ও ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি। ফ্যান তৈরির কারখানাটি একটি বাসা বাড়িতে করা হয়েছে। ভবনটি দ্বিতীয় তলায় থাকলেও তার উপর টিনশেড দিয়ে আরো একতলা বাড়ানো হয়। রাতেই মরদেহগুলো গাজীপুর জেলা প্রশাসন ও পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এসএম তরিকুল ইসলাম জানান, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৫ সদস্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটির প্রধান গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শাহীনুল ইসলাম। অন্য সদস্যরা হলেন- কলকারখানা পরিদর্শকের একজন, শিল্প পুলিশের একজন, জেলা পুলিশের একজন ও ফায়ার সার্ভিসের একজন সদস্য। আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *