রাজশাহী: চকচকে ধারাল অস্ত্র উঁচিয়ে বাজনার তালেতালে বুনো উল্লাস করা সেই কিশোর গ্যাংয়ের ৭ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বাকি সদস্যদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
বুধবার (১ নভেম্বর) সকালে তাদের গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি) সদর দপ্তরের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) জামিরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, রাজশাহী মহানগরীতে গেল ২৪ ঘণ্টায় অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন অপরাধে মোট ৪৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এর মধ্যে কেবল শাহ মখদুম থানা এলাকা থেকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১১ জনকে। এর মধ্যে অস্ত্র নিয়ে প্রকাশ্যে নাচানাচি করা কিশোর গ্যাংয়ের সাতজনও রয়েছে।
উপ-কমিশনার আরও বলেন, মঙ্গলবার রাতে ওই কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের একটি ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর আরএমপি কমিশনারের নির্দেশে রাতেই অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এসময় বেশ কয়েকটি দেশীয় ধারাল অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
আর যারা এরই মধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। ভিডিওটি ৩/৪ মাস আগের। তাদে দেখা যায়, ধারাল রামদা, চাপাতি, চাইনিজ কুড়াল, চাকুসহ বিভিন্ন ধরনের দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ড্রামের বাজনার সঙ্গে সঙ্গে বুনো উল্লাস করছে একদল কিশোর।
সম্প্রতি দুই চিকিৎসক খুন, হামলায় আহত করে এক কিশোরকে আইসিইউতে পাঠানো এবং ছিনতাই ঘটনা বাড়ার পর এমন ভিডিও ভাইরাল হওয়ায় জনমনে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
এর প্রতিক্রিয়ায় রাজশাহীবাসী কিশোর গ্যাংয়ের লাগাম টেনে ধরার দাবি তোলেন। অস্ত্র ও আশকারা দিয়ে তাদেরকে যারা ‘গডফাদার’ হিসেবে লালনপালন করছেন তাদেরও আইনের আওতায় আনার দাবি তোলা হয়।
রাজশাহীর শাহ মখদুম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেন বলেন, ওই ভিডিও ভাইরালের পরপরই তারা এই ব্যাপারে খোঁজ-খবর নেওয়া শুরু করেন। পরে জানতে পারেন ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিও অন্তত তিন থেকে চার মাস আগের। রাজশাহী মহানগরীর শাহ মখদুম থানার গাংপাড়া এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা নিজেরাই ভিডিওটি করেছিল। মঙ্গলবার তা ভাইরাল করে দেওয়া হয়।
ওসি আরও জানান, এই কিশোর গ্যাংয়ের এক সদস্যের নাম আরাফাত হোসেন। চার দিন আগে তার ওপর হামলা চালিয়েছে একই গ্যাংয়ের অন্য সদস্যরা। আরাফাতের অবস্থা এখন আশঙ্কাজনক। সে বর্তমানে রামেক হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন। আর এই সদস্যের ওপর হামলার পর তার পক্ষের অন্য সদস্যরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওই ভিডিওটা ছেড়ে দিয়েছে। আরাফাতের অভিভাবক হিসেবে তার ভাই হুমায়ুন কবির গত সোমবার (৩০ অক্টোবর) বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। তাই পুলিশ গ্রেপ্তার অভিযান শুরু করেছে। শিগগিরই সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে