আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার খাজরা ইউনিয়নের গদাইপুরে বর্তমান চেয়ারম্যান ডালিম ও সাবেক চেয়ারম্যান কুদ্দুস গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে সরবত আলী মোল্যা (৫৫) নামে একজন নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন উভয়পক্ষের কমপক্ষে ১০ জন।
ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে চেয়ারম্যান ডালিমের বাড়িসহ কয়েকটি বাড়ি। এ ঘটনায় পুলিশ ১০ জনকে আটক করেছে।
সরবত আলী মোল্যা গদাইপুর গ্রামের মৃত সামছুর মোল্যার ছেলে।
আটকরা হলেন- চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ ডালিমের ভাই জুলি, বাচ্চু, বাচ্চুর জামাই সাদ্দাম ও বাচ্চুর ছেলে কাইয়ুম ও প্রতিবেশী মোহাম্মদ আলীসহ ১০ জন।
আহতরা হলেন- চেয়াম্যান ডালিমের ভাই গদাইপুর গ্রামের আহসান হাবিব টগর, একই গ্রামের কাজল ফকির, জাকির মোল্যা, সেলিম সরদার এবং কুদ্দুস গ্রুপের রব্বানী মোল্যা, সবুজ মোল্যা, লাদেন মোল্যা ও শৈবাল মণ্ডলসহ ১০ জন। তারা ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার সকালে খাজরা ইউপি চেয়ারম্যান ডালিমের ভাই টগর মাছ বিক্রয়ের জন্য গদাইপুর মৎস্য গেটে যান। এসময় শত্রুতার জেরে একাধিক মামলার আসামি গদাইপুর গ্রামের সবুজ মোল্যার নেতৃত্বে মোমিন, মফিজুল, আছাদুল, মজিদ মোল্যাসহ ৮-১০ জন সংঘবদ্ধ হয়ে হাতুড়ি ও রামদা দিয়ে তাকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে।
তাকে বাঁচাতে জাকির ও সেলিম এগিয়ে এলে তাদেরও পিটিয়ে জখম করে তারা। এসময় টগরের কাছে মাছ বিক্রয়ের নগদ টাকা ও সেলিমের মোটরসাইকেল কেড়ে নেওয়া হয়।
আহতদের উদ্ধার করে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে টগরের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে ঢাকা মেডিক্যালে স্থানান্তর করা হয়।
এদিকে, টগর গুরুতর আহত হওয়ার খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে শতশত মানুষ একত্রিত হয়ে প্রতিপক্ষের ওপর হামলা চালায়। এতে সরবত ও রব্বানীসহ কমপক্ষে পাঁচজন আহত হয়।
আহতদের উদ্ধার করে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এদের মধ্যে সরবত মোল্যার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে খুলনা মেডিক্যালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার দিবাগত রাত ১টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
এদিকে, সরবতের মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে রুহুল কুদ্দুসের লোকজন একত্রিত হয়ে চেয়ারম্যান ডালিমের বাড়িসহ আশপাশের কয়েকটি বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট করে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং ১০ জনকে আটক করে।
চেয়ারম্যান ডালিমের স্ত্রী রেহেনা খাতুন জানান, তার বাড়ি ভাঙচুরসহ নগদ টাকা, স্বর্ণাণঙ্কার, দলিলসহ সব মালামাল লুটপাট করা হয়েছে।
আশাশুনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুস সালাম জানান, ঘটনাস্থল থেকে ১০ জনকে আটক করা হয়েছে। পরিস্থিতি এখন পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।