মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলায় কালীগঙ্গা নদীতে অবৈধ ড্রেজার উচ্ছেদ অভিযানের সময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের ওপর এক ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যের নেতৃত্বে ড্রেজার ব্যবসায়ীরা হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় ভ্রাম্যমাণ আদালতে অংশ নেওয়া চার জন আহত হয়েছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সরকারি গাড়িও ভাঙচুর করা হয়েছে।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে ঘিওর থানায় সরকারি কাজে বাধা, মারধর ও সরকারি গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগে থানায় মামলা হয়েছে। ইউএনও আইরিন আক্তার এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
হামলায় আহত ব্যক্তিরা হলেন- উপজেলা ত্রাণ শাখার অফিস সহায়ক ইলিয়াস হোসেন, উপজেলা তথ্য অফিসের অফিস সহায়ক ফরিদ মিয়া, ইউএনও’র গাড়ির চালক এনামুল হক ও নৈশপ্রহরী শাহ আলম। এদের মধ্যে ফরিদকে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
ভ্রাম্যমাণ আদালত এবং মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার জন্য ইউএনও আইরিন আক্তারের নেতৃত্বে ইলিয়াস হোসেন, ফরিদ মিয়া, এনামুল হক ও শাহ আলম উপজেলার উত্তর তরা এলাকায় যান। সেখানে গিয়ে তারা জানতে পারেন, কেল্লা এলাকায় কালীগঙ্গা নদীতে ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এর পর বিকাল ৫টার দিকে সেখানে গিয়ে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
সন্ধ্যা ৬টার দিকে অবৈধ বালু ব্যবসায়ের সঙ্গে জড়িত মো. শরিফ, খোরশেদ আলম, মো. টুটুল, মোহাম্মদ আলী ও সদর উপজেলার দিঘী ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের সদস্য আবদুল ওহাবসহ ৫০-৫৫ জন দেশীয় বিভিন্ন অস্ত্র নিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের ওপর হামলা করে। এতে উপজেলা প্রশাসনের ওই চার কর্মচারী আহত হন। এ সময় ইউএনও’র গাড়ি ভাঙচুর এবং তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়।
তবে ইউপি সদস্য আব্দুল ওহাবের দাবি, তিনি ঘটনাস্থলে ছিলেন না। মামলায় উল্লেখিত অন্য আসামিরা সবাই ড্রেজার ব্যবসায়ী বলে তিনি জানান।
ইউএনও আইরিন আক্তার বলেন, ‘কালীগঙ্গা নদী থেকে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছিলো। ভূক্তভোগী এলাকাবাসী এ বিষয়ে অভিযোগও করেছেন। মঙ্গলবার বিকালে কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা) প্রকল্প পরিদর্শনের জন্য বানিয়াজুরী ইউনিয়নের কয়েকটি এলাকায় যাই। এসময় এক ব্যক্তি আমাকে মুঠোফোনে অবৈধ ড্রেজার দিয়ে মাটি উত্তোলনের বিষয়টি জানালে পাশের কেল্লা এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করি। তখনই হামলার ঘটনা ঘটে।’
এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে নৈশপ্রহরী শাহ আলম বাদী হয়ে শরিফ, খোরশেদ আলম, টুটুল, মোহাম্মদ আলী ও ইউপি সদস্য ওহাবসহ ১৮ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা করেছেন। মামলা অজ্ঞাত আরও ৫০-৫৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে ঘিওর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুল আলম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।