এজাহার বদলে দেওয়ার ঘটনায় সেই ওসির বিরুদ্ধে তদন্ত চলবে

রাজশাহীর পুঠিয়ায় শ্রমিক নেতা নুরুল ইসলাম হত্যা মামলার এজাহার বদলে দেওয়ার ঘটনায় তৎকালীন ওসি সাকিল উদ্দিন আহমেদের বিষয়ে তদন্ত করতে হাইকোর্ট যে আদেশ দিয়েছিলেন তা বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। এর ফলে ওই ওসির বিরুদ্ধে তদন্ত চলতে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সাকিল উদ্দিনের আবেদন খারিজ করে রবিবার (১ মার্চ) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন ও আব্দুল মতিন খসরু। অন্যপক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ফিদা এম কামাল। তার সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া।

এর আগে গত ১ ডিসেম্বর পুঠিয়া উপজেলার শ্রমিক নেতা নুরুল ইসলাম হত্যা মামলার এজাহার বদলে দেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করার রায় দেন হাইকোর্ট। বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ ওই রায় দেন।

রায়ে হাইকোর্ট বলেছিলেন, ওই ঘটনায় পুঠিয়ার তৎকালীন ওসি সাকিল উদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গুরুতর। যা দণ্ডবিধির ১৬৬ ও ১৬৭ ধারা অনুসারে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। দণ্ডবিধির ওই ধারা দুটি দুদক আইন-২০০৪ এর তফশিলভুক্ত। তাই রাজশাহীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে তার অনুসন্ধানী প্রতিবেদন এবং এ সংক্রান্ত নথি দুদকে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হলো। উক্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর দুদককে আইন ও বিধি অনুসারে পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হলো।

পাশাপাশি সাকিল উদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে শ্রমিক নেতা নুরুল ইসলামের মেয়ে, তার অধীনস্থ পুলিশ সদস্য ও তার শাশুড়ির দেওয়া অভিযোগ দ্রুত তদন্ত করে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে পুলিশ মহাপরিদর্শককে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।

প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ২২ জুলাই একটি জাতীয় দৈনিকে ‘এজাহার বদলে দিলেন ওসি’ শীর্ষক প্রতিবেদনসহ বিভিন্ন আঞ্চলিক দৈনিকের প্রতিবেদন সংযুক্ত করে এ রিট দায়ের করা হয়। নুরুল ইসলামের মেয়ে নিগার সুলতানার ওই রিটের পর ১৬ সেপ্টেম্বর ওসি সাকিল উদ্দিন আহমেদের এজাহার বদলে দেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে বিচারিক তদন্তের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে রুলও জারি করেন আদালত।

ওই আদেশের পর রাজশাহীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ঘটনা তদন্ত করে হাইকোর্টে প্রতিবেদন দেন। ২৭ নভেম্বর ওই প্রতিবেদনের ওপর শুনানি হয়। শুনানি শেষে গত ১ ডিসেম্বর রায় দেন হাইকোর্ট। ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল আবেদন করা হলে আদালত তা খারিজ করে দিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *