ক্যাসিনো হোতা ২ ভাই এনামুল-রূপম রিমান্ডে

ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের সময় এর হোতা হিসেবে আলোচনায় আসা রাজধানীর গেন্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগ নেতা দুই ভাই এনামুল হক ও রূপম ভূঁইয়াকে চার দিন করে রিমান্ড দিয়েছেন আদালত।

মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) মানি লন্ডারিংয়ের পৃথক দুই মামলায় ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরী তাদের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এদিকে, গেন্ডারিয়া থানার মামলায় গ্রেফতার এনামুলের সহযোগী শেখ সানি মোস্তফারও তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে।

এর আগে সকালে সিআইডির তদন্ত কর্মকর্তারা পৃথকভাবে আসামিদের ১০ দিন করে রিমান্ড আবেদন করেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আব্দুল্লাহ আবু বলেন, মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে দুই মামলায় তিন আসামির বিরুদ্ধে ১০ দিন করে রিমান্ড আবেদন করেন সিআইডির তদন্ত কর্মকর্তা। অপরদিকে, রিমান্ড বাতিল চেয়ে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা তাদের পক্ষে জামিন আবেদন করেন। এরপর শুনানি শেষে এনামুল ও রূপমের চার দিন করে এবং শেখ সানির তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে।

এনামুল হক গেন্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এবং রূপম একই কমিটির যুগ্ম সম্পাদক বলে স্থানীয় নেতারা জানিয়েছেন।

সোমবার সকালে রাজধানীতে পৃথক অভিযান চালিয়ে এই দুই ভাইকে গ্রেফতার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এর আগে গত বছর ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু হওয়ার পর এই দুই ভাই আলোচনায় আসেন। তবে শুরু থেকেই তারা পলাতক ছিলেন।

গত বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর এনামুল ও রূপম এবং তাদের দুই কর্মচারীর বাসায় অভিযান চালায় র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)। অভিযানে তাদের বাসা থেকে পাঁচ কোটি টাকা এবং সাড়ে সাত কেজি সোনা উদ্ধার করা হয়। এরপর সূত্রাপুর ও গেন্ডারিয়া থানায় তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়। একাধিকবার অভিযান চালিয়েও এতদিন তাদের ধরা যায়নি।

তখন র‍্যাব জানায়, এনামুলদের ১৫টি বাসা রয়েছে রাজধানীতে। ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের অন্যতম শেয়ারহোল্ডার এনামুল ক্লাব থেকে টাকা এনে বাসায় রাখতেন। কিন্তু বিপুল পরিমাণ টাকা রাখার জায়গাও হতো না। তাই টাকা দিয়ে তিনি স্বর্ণালংকার কিনতেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এনামুল ও রূপম গত ছয় থেকে সাত বছরে পুরান ঢাকায় বাড়ি কিনেছেন কমপক্ষে ১২টি। ফ্ল্যাট কিনেছেন ছয়টি। পুরোনো বাড়িসহ কেনা জমিতে গড়ে তুলেছেন নতুন নতুন ইমারতও।

স্থানীয় লোকজন জানায়, এই দুই ভাইয়ের মূল পেশা ক্যাসিনো। আর নেশা বাড়ি কেনা। তাদের পরিবারের পাঁচ সদস্য, ঘনিষ্ঠজনসহ মোট ১৭ জন আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের পদ পেয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *