চোরাই মোবাইল বিক্রি হচ্ছে রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেটে

ঢাকা: চোরাই মোবাইল ফোনে আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করে রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেটে বিক্রি হচ্ছে সেকেন্ড হ্যান্ড ফোন হিসেবে। চোরাই মোবাইলের এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত রয়েছেন রাজধানীর নামি-দামি শপিং মলের মোবাইল ফোনের বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা।

সোমবার (৩০ অক্টোবর) চোরাই মোবাইল ফোন চক্রের হোতাসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (দক্ষিণ) ইউনিট।

রাজধানীর উত্তরখানসহ বিভিন্ন মার্কেটে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এ বিষয়ে মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) উত্তরখান থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন- চক্রের হোতা মো. আল আমিন, মো. দিপু, মো. আলাউদ্দিন (বাবলু) ওরফে জাপান বাবু, মো. আলী বেপারী ও মো. ইউনুছ আলী শুভ।

অভিযানে তাদের কাছ থেকে শতাধিক চোরাই মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (দক্ষিণ) বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ (এডিসি) মো. সাইফুর রহমান আজাদ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গ্রেপ্তার আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে তিনি জানান, গ্রেপ্তার জাপান বাবু ও আলী ব্যাপারী দীর্ঘদিন ধরে উত্তরা, আব্দুল্লাহপুর ও টঙ্গী এলাকায় চুরি, ছিনতাই ও পকেটমারের মতো অপরাধ করে আসছিলেন। বিভিন্ন রাস্তা বা যানবাহনের মধ্যে থেকে তারা মোবাইল ফোন চুরি কিংবা ছিনতাই করে নিয়ে আসে। পরে তারা মোবাইলগুলো ব্র্যান্ড অনুযায়ী ৪-৬ হাজার টাকা করে ইউনুসের কাছে বিক্রি করতেন। পরে ইউনুস এসব মোবাইল ফোন দিপুর কাছে ৮-১০ হাজার টাকায় বিক্রি করতেন। তৃতীয় পর্যায়ে দিপু ও শুভ এসব মোবাইল ১২-১৪ হাজার টাকায় আল-আমিন ও শাহজাহানের কাছে বিক্রি করে দিতেন। মোবাইল ফোন ছাড়াও তাদের কাছ থেকে ল্যাপটপ ও ডিএসএলআর ক্যামেরা কিনতো আল-আমিন ও শাহজাহান।

আল-আমিনের নর্দা এলাকার একটি শপিংমলে মোবাইল ফোন বিক্রির দোকান রয়েছে এবং রাজধানীর কারওয়ান বাজারে শাহজাহানের মোবাইল ফোনের দোকান রয়েছে।

তিনি আরও জানান, গ্রেপ্তার আল-আমিন এসব মোবাইল ফোন কিনে সফটওয়ারের মাধ্যমে আইএমইআই পরিবর্তন করে সেকেন্ড হ্যান্ড ফোন হিসেবে নিজেদের দোকানে রেখে ২৫-৩০ হাজার টাকায় সাধারণ মানুষের কাছে বিক্রয় করতেন। এছাড়াও তিনি ভারত, দুবাই, মালয়েশিয়া ও অন্যান্য দেশ থেকে চোরাই মোবাইল ফোন বাংলাদেশে এনে বিক্রি করতেন।

গোয়েন্দা পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, এখন থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে সবাই আর তার হারানো ফোনগুলো পায় না। কারণ ফোন চুরি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তার ‘আইএমইআই কাটার’ দিয়ে আইএমআই চেঞ্জ করে ফেলে। একটি ফোন মানুষের অনেক আবেগের জায়গা। সংঘবদ্ধ অপরাধ চক্রের ছিনতাইকারী থেকে শুরু করে মোবাইল ফোন বিক্রির দোকানের মালিকসহ যারা চোরাই ফোন বিক্রি করে সব পর্যায়ের আসামি গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, দেশের চোরাই মোবাইল ফোন ভারতে চলে যায় ভারতের ফোন বাংলাদেশে আসে। এবিষয়গুলোতে জনসাধারণকে সচেতন করা প্রয়োজন। আন অথরাইজ ফোন অথবা চোরাই ফোন অথবা পুরাতন ফোন কেনার ক্ষেত্রে সবার সতর্ক থাকা উচিত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *