জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আওয়ামী লীগ নেতা রুপন ভূঁইয়াকে পাঁচ দিনের জন্য রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন আদালত।
রোববার (১৯ জানুয়ারি) মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক নেয়ামুল আহসান গাজী। শুনানি শেষে ঢাকার মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কেএম ইমরুল কায়েশ পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
অপরদিকে তার ভাই এনামুল হক এনুকে দুদকের মামলায় গ্রেফতার দেখানোর (শ্যোন অ্যারেস্ট) আবেদন মঞ্জুর করেছেন একই আদালত।
এনামুল গেন্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও রুপন একই থানা কমিটির যুগ্ম সম্পাদক।
গত বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর এনু-রুপনের বাড়িতে অভিযান চালায় র্যাব। সেখান থেকে টাকা ও গহনা জব্দ করার পর ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের কর্মচারী আবুল কালাম ও এনুর বন্ধু হারুন অর রশিদের বাসায় অভিযান চালানো হয়। ওই অভিযানে ৫ কোটি ৫ লাখ টাকা, ৮ কেজি স্বর্ণালঙ্কার ও ৬টি আগ্নেয়াস্ত্র জব্দ করে র্যাব।
এরপর দুদক তাদের সম্পদের বিষয়ে অনুসন্ধান চালায়। অনুসন্ধান শেষে গত বছরের ২৩ অক্টোবর ৩৫ কোটি টাকা জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে এই দুজনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। সংস্থাটির ঢাকা-১ সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলা দুটি করেন দুদকের সহকারী পরিচালক মামুনুর রশিদ চৌধুরী ও মোহাম্মদ নেয়ামুল আহসান গাজী।
এনামুল হক এনুর বিরুদ্ধে করা মামলার বাদী সহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ চৌধুরী। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, এনু ২১ কোটি ৮৯ লাখ ৪৩ হাজার টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন।
এজাহারে বলা হয়েছে, এনুর আয়কর নথি, গণমাধ্যমের সংবাদ ও গোপন সূত্রে পাওয়া তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, এনুর বৈধ আয়ের কোনো উৎসই নেই। ক্যাসিনো থেকে আসা অর্থ দিয়েই তিনি প্রচুর সম্পদ অর্জন করেছেন। তিনি বিদেশেও বিপুল পরিমাণ সম্পদ গড়ে তুলেছেন বলে দুদকের কাছে তথ্য আছে।
অন্যদিকে, দুদকের আরেক সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নেয়ামুল আহসান গাজী বাদী হয়ে রুপন ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে যে মামলা করেন তার এজাহারে বলা হয়েছে, রুপন অসৎ উদ্দেশ্যে অবৈধপন্থায় নামে-বেনামে ১৪ কোটি ১২ লাখ ৯৫ হাজার ৮৮২ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন।
সর্বশেষ ২০১৯-২০ করবর্ষে তার দাখিল করা আয়কর রিটার্নেও কোনো স্থাবর সম্পদের তথ্য দেননি। তবে ব্যবসার পুঁজি বাবদ ২ কোটি ৬২ লাখ ২৮ হাজার ৮৫২ টাকাসহ ৩ কোটি ৮ লাখ ৬ হাজার ৯১১ টাকার অস্থাবর সম্পদের ঘোষণা দিয়েছেন।
এর মধ্যে ব্যবসার পুঁজি এবং ‘এনু রুপন স্টিল করপোরেশন’র শেয়ার বাবদ প্রদর্শিত ২ কোটি ৭১ লাখ ৮২ হাজার ৪৮১ টাকা অর্জনের সপক্ষে কোনো বৈধ আয়ের উৎস দেখাননি। এটা তার জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ।