প্রতিশ্রুতি আর অভিযোগের বৃত্তে দুই প্রার্থীর প্রচারণা

ভিত্তিহীন অভিযোগ করে বিএনপি নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোছলেম উদ্দীন আহমদ। আর নির্বাচনে পরাজয় নিশ্চিত জেনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নার্ভাস হয়ে পড়েছেন বলে দাবি করেছেন বিএনপির প্রার্থী আবু সুফিয়ান।

নির্বাচনী গণসংযোগে এ দুই প্রার্থীর প্রতিশ্রুতি আর পাল্টাপাল্টি অভিযোগের ইতি ঘটবে ১৩ জানুয়ারি।

নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন ওয়ার্ডে জলাবদ্ধতা নিরসন, রাস্তাঘাটের উন্নয়ন, শিল্পাঞ্চলে আধুনিকায়ন, কালুরঘাট নতুন সেতু করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন মোছলেম উদ্দীন। সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম চলমান রাখতে দলীয় দৃষ্টিকোণ থেকে নয়, উন্নয়নের স্বার্থে নৌকা প্রতীকে ভোট দিতে তিনি ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছেন।

তিনি বলেছেন, বিএনপি’র প্রার্থীর কাছ থেকে আচরণ বিধি শিখতে হবে না। নির্বাচন আচরণ বিধিমালা মেনে নৌকার সব কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে এবং জনগণের রায়ের ওপর সম্মান রেখে নৌকার বিজয় সুনিশ্চিত করতে তিনি কাজ করছেন।

অপরদিকে আবু সুফিয়ান বলছেন, কালুরঘাট সেতু বোয়ালখালীবাসীর দুঃখ। নির্বাচন এলেই বৈতরণী পার হওয়ার জন্য কালুরঘাট সেতু ইস্যু এনে হাজির করা হয়। আওয়ামী লীগ ১১ বছর ক্ষমতায় থেকেও এ সেতু নির্মাণ করতে পারেনি। আগামী এক বছরে যে পারবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। এবারও মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দেওয়া হচ্ছে। তারা এখন সন্ত্রাসের পথ বেছে নিয়েছে।

তিনি বলেছেন, বোয়ালখালী উপজেলায় আমার ধানের শীষের প্রচারণায় সাধারণ মানুষের ঢল দেখে তাদের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। তারা হামলা করে নেতাকর্মীদের আহত করে। এলাকার সাধারণ মানুষ সন্ত্রাসীদের প্রতিরোধ করেছে। বোয়ালখালীকে একটি সুন্দর উপশহর হিসেবে গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতিও দিচ্ছেন তিনি।

সংসদ সদস্য মঈন উদ্দীন খান বাদলের মৃত্যুতে চট্টগ্রাম-৮ আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয়। উপনির্বাচনে ৬জন প্রার্থী থাকলেও মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে মোছলেম উদ্দিনের সঙ্গে আবু সুফিয়ানের।

ইতোমধ্যে পোস্টারে ছেয়ে গেছে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা। সর্বত্র চলছে নির্বাচন নিয়ে আলোচনা। ভোট হবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম)।

স্থানীয়রা বলছেন, টানা তিনবারের সংসদ সদস্য বাদলের দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণ হওয়ার আগেই তিনি চলে গেছেন না ফেরার দেশে। এখন দুই প্রার্থীও দিচ্ছেন একই আশ্বাস। কালুরঘাট সেতু করে দেবেন তারা। এ আশ্বাসও পূরণ হবে কিনা-তা নিয়ে তারা সন্দিহান।

এছাড়া বোয়ালখালীতে ছোট-বড় ৩৫৪টি সড়ক রয়েছে। এর মোট দৈর্ঘ্য ৬৮৯ কিলোমিটার। এর মধ্যে পিচঢালা সড়ক রয়েছে ১৯৬ কিলোমিটার। প্রায় ৫০ কিলোমিটার সড়কের অবস্থা খারাপ। অল্প বৃষ্টিতেই সড়কে পানি জমে যায়। কানুনগোপাড়া, বেঙ্গুরা, দাশের দিঘি এলাকার সড়ক খানাখন্দে ভরা। এসব সড়ক দিয়ে হাজারো মানুষ শহরে যাওয়া-আসা করে।

জরাজীর্ণ একমুখী কালুরঘাট সেতু দিয়ে গ্রাম থেকে রোগীকে শহরে নিয়ে যেতে দুর্ভোগে পড়তে হয়। অনেক সময় সেতুর মাঝখানে বিকল হয়ে যায় গাড়ি। তখন লেগে যায় ভয়াবহ জানজট। ঘন্টার পর ঘণ্টা সেতুর দুই পাড়ে অপেক্ষা করতে হয় যাত্রীদের। বিকল্প সড়কে পটিয়া হয়ে শহরে আসতে গেলেও ছোট-বড় গর্তের কারণে টেক্সী চালাতে কষ্ট হয় চালকদের।

বোয়ালখালী উপজেলার কধুরখীল, পশ্চিম গোমদন্ডী, পূর্ব গোমদন্ডী, শাকপুরা, সারোয়াতলী, পোপাদিয়া, চরণদ্বীপ, আমুচিয়া ও আহল্লা-করলডেঙ্গা ইউনিয়ন এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ৩, ৪, ৫, ৬ ও ৭ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত সংসদীয় আসনটির ভোটার ৪ লাখ ৭৫ হাজার ৯৮৮জন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *