কক্সবাজার: রেললাইন ও মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দরসহ নানা মেগা প্রকল্প উদ্বোধনের জন্য আগামী ১১ নভেম্বর কক্সবাজারে আসছেন প্রধানমন্ত্রী। এদিন সকালে কক্সবাজার আইকনিক রেলস্টেশনে সুধী সমাবেশ, রামু পর্যন্ত রেলে চড়ে রামু পর্যন্ত রেললাইন পরিদর্শন এবং পরে মহেশখালীর মাতারবাড়িতে জনসভায় ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এ জনসভায় রামু, কক্সবাজার সদর, কুতুবদিয়া, চকরিয়াসহ জেলার প্রতিটি উপজেলা থেকে লাখো লোক সমাগমের প্রস্তুতি নিচ্ছে আওয়ামীলীগ। প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে ঘিরে পাড়ায় মহল্লায় উৎসবের আমেজ চলছে।
প্রধানমন্ত্রীর কক্সবাজার সফর উপলক্ষে গত কয়েকদিন ধরেই আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের মাঝে জোর প্রস্তুতি চলছে।
কক্সবাজার-৩ (রামু,কক্সবাজার,ঈদগাঁও) আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল বলেন, প্রধানমন্ত্রী ট্রেনে চড়ে রামু যাবেন।
সেখানে চার ইউনিয়নের মানুষ তাকে স্বাগত জানাবেন। এরপর আমার বাকি ১৮ ইউনিয়নের মানুষ ৮০ কিলোমিটার দূরে পাঁচ শতাধিক বাসে করে মাতারবাড়ি জনসভায় যোগ দেবেন।
এজন্য সব প্রস্তুতি শেষের পথে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর এ আগমনকে ঘিরে জেলার সর্বত্র সাজ সাজ রব বিরাজ করছে। পাড়া-মহল্লা থেকে শুরু করে সবখানে উৎসবের আমেজ চলছে।
কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগ নেতা মাহবুবুর রহমান চৌধুরী বলেন, মহেশখালীর মাতারবাড়ীর জনসভায় জেলার নয় উপজেলার নেতাকর্মীদের ওয়ার্ড পর্যায়ে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন উপজেলার নেতাকর্মীরা ইতোমধ্যে প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।
মহেশখালী কুতুবদিয়া আসনের সংসদ সদস্য আশেকউল্লাহ রফিক বলেন, আমার নির্বাচনী এলাকায় প্রধানমন্ত্রীর জনসভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আমরা খুবই সৌভাগ্যবান। এখানে প্রধানমন্ত্রী দেশের বড় বড় প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করছেন। এজন্য দ্বীপ উপজেলা মহেশখালী ও কুতুবদিয়ার মানুষ প্রধানমন্ত্রীর কাছে চির কৃতজ্ঞ।
তিনি বলেন, এ কৃতজ্ঞতাস্বরূপ আগামী ১১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় দুই দ্বীপ উপজেলার লাখ লাখ মানুষ ছাড়াও পার্শ্ববর্তী উপজেলা থেকে হাজার হাজার মানুষ যোগ দেবেন।
চকরিয়া-পেকুয়া আসনের সংসদ সদস্য জাফর আলম বলেন, আমাদের পার্শ্ববর্তী উপজেলায় অনুষ্ঠেয় প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় আমার নির্বাচনী এলাকা থেকে অর্ধলক্ষাধিক মানুষ যোগ দেবেন বলে আশা করা যাচ্ছে। এজন্য ইতোমধ্যে চকরিয়া, পেকুয়া ও মাতামুহুরী সাংগঠনিক উপজেলার ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাকর্মীরা সংগঠনের বর্ধিত সভা ডেকে প্রস্তুতি নিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রীর কক্সবাজার সফর উপলক্ষে চলছে প্রশাসনের প্রস্তুতিও। ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ নিরাপত্তা টিমের সদস্যরা কক্সবাজারে এসে পৌঁছেছেন।
‘তোঁয়ারার লাই আঁর পেট পুরে’
গত বছরের ৭ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী সর্বশেষ কক্সবাজার সফর করেন। ওই সময় তিনি কক্সবাজারে ১৯৬৩.৮৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ২৯টি প্রকল্পের উদ্বোধন ও চারটি নতুন প্রকল্পের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন এবং ইনানীতে আটাশ দেশের চারদিনের নৌ মহড়ার উদ্বোধন করেন। টানা তৃতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর সেটি ছিল তার প্রথম কক্সবাজার সফর। এর সাড়ে ছয় বছর আগে ২০১৭ সালের ৬ মে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ উদ্বোধনকালে তিনি সর্বশেষ কক্সবাজার সফর করেছিলেন।
২০১৭ সালের ৬ মে মাসের পর পর প্রধানমন্ত্রী সশরীরে কক্সবাজার সফরে না এলেও ভার্চ্যুয়ালি নানা অনুষ্ঠানে নিয়মিত উপস্থিত থাকেন। তিনি গতবছর ১৮ মে ভার্চ্যুয়ালি উপস্থিত থেকে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কউক) ভবন উদ্বোধন করেন। তাছাড়া গত বছর ৩১ মার্চ উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ উদযাপন উপলক্ষে ‘উন্নয়নের নতুন জোয়ার, বদলে যাওয়া কক্সবাজার’ প্রতিপাদ্য নিয়ে কক্সবাজারে আয়োজিত একটি জাতীয় অনুষ্ঠানে কক্সবাজারবাসীকে উদ্দেশ্যে করে চাটগাঁইয়া আঞ্চলিক ভাষায় বলেন, ‘তোঁয়ারার লাই আঁর পেট পুরে’।