বিএনপির মহাসমাবেশ: ৩৬ মামলায় গ্রেপ্তার ১৭৭২

২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশে পুলিশ সদস্য হত্যা, সংঘর্ষ ও ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের ঘটনায় রাজধানীর বিভিন্ন থানায় দুই দিনে ৩৬টি মামলা দায়ের হয়েছে। এসব মামলায় এজাহারে এক হাজার ৫৪৪ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

রোববার (২৯ অক্টোবর) ভোর থেকে সোমবার (৩০ অক্টোবর) ভোর পর্যন্ত রাজধানীর রমনা, লালবাগ, মতিঝিল, ওয়ারী, তেজগাঁও, মিরপুর, গুলশান ও উত্তরা থানা এলাকা থেকে ২৫৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
২১ অক্টোবর থেকে ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত এসব থানা এলাকা থেকে এক হাজার ৭৭২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সোমবার (২৯ অক্টোবর) বিকেলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. ফারুক হোসেন এ তথ্য জানিয়েছেন।

ডিএমপির মিডিয়া বিভাগ থেকে পাঠানো মামলা ও গ্রেপ্তারের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২৯ অক্টোবর নতুন করে আরও আটটি মামলা যুক্ত হয়েছে।
মোট মামলার সংখ্যা ৩৬টি। নতুন করে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ২৫৬ জন।

এর মধ্যে ডিএমপির উত্তরা বিভাগে নয়, গুলশান বিভাগে ১৯, মিরপুর বিভাগে ৭৩, তেজগাঁও বিভাগে ১৪, ওয়ারীতে ২২, মতিঝিলে ৯৫, লালবাগ বিভাগে ১১ ও রমনা বিভাগ ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

২৮ অক্টোবরের হিসেবে দেখা গেছে, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় মহাসমাবেশের নামে সংঘর্ষ ও হামলার ঘটনায় ডিএমপির আটটি বিভাগে ২৮টি মামলা হয়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি মতিঝিল বিভাগের পল্টন থানায় ১১ মামলা। সবচেয়ে কম উত্তরা ও রমান বিভাগে একটি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এছাড়াও গুলশান বিভাগে ভাটারা থানায় দুইটি, বাড্ডা থানায় এক, মিরপুর বিভাগের প্রতিটি থানায় একটি করে সাত থানায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সাতটি মামলা হয়েছে। তেজগাঁও বিভাগের হাতিরঝিল থানায় দুটি এবং ওয়ারী বিভাগে ডেমরা, ওয়ারী ও যাত্রাবাড়ী থানায় একটি করে মোট তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এসব মামলায় সমাবেশেসহ বিভিন্ন এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার ৬৯৬ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এছাড়াও ২১ অক্টোবর থেকে ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত গত নয় দিনে এক হাজার ৭৭২ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপির বিভিন্ন থানা ও গোয়েন্দা পুলিশ।

ডিএমপির পাঠানো গ্রেপ্তারের তালিকা অনুযায়ী পুলিশের আটটি বিভাগের বিভিন্ন থানা ২১ অক্টোর গ্রেপ্তার করেছে ৩১ জন, ২২ অক্টোবর গ্রেপ্তার ৪২ জন, ২৩ অক্টোবর ৪২ জন, ২৪ অক্টোবর ৮৫ জন, ২৫ অক্টোবর ১১১ জন, ২৬ অক্টোবর ২০২জন ও ২৭ অক্টোবর ৩৪০ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আর ২৮ অক্টোবর সমাবেশের দিন সর্বোচ্চ ৬৯৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

যদিও সমাবেশের আগে গ্রেপ্তারের অভিযোগের বিষয়ে ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলেছেন, সমাবেশ উপলক্ষে কোনো নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি, তদন্তে পাওয়া আসামি, নাশকতা ঘটাতে পারে এমন সন্দেহজনক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এদিকে মহাসমাবেশ চলাকালে রাজধানীর রমনা থানার মিন্টো রোড এলাকার হেয়ার রোডে প্রধান বিচারপতির বাস ভবনে হামলার ঘটনায় রমনা থানায় একটি মামলা (নম্বর-১৮) হয়েছে। সেই মামলায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

রোববার (২৯ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর গুলশান থেকে তাকে আটক করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। দিনভর জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাতে তাকে রমনা থানায় দায়ের হওয়া মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *