দেশে নতুন করে আরও তিন জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্ত তিন জনের মধ্যে একটি ছেলে শিশু, একটি মেয়ে শিশু এবং অপরজন নারী। দুই শিশুর বয়সই ১০ বছরের নিচে। সোমবার (১৬ মার্চ) নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।
তিনি বলেন, গত ১৪ মার্চ জার্মানি ও ইতালি থেকে আসা যে দুই ব্যক্তির করোনা আক্রান্তের খবর নিশ্চিত হওয়া গিয়েছিল, তাদেরই একজনের পরিবারের তিন সদস্য নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, ‘নতুন করে আক্রান্ত এই তিন জনের সংক্রমণ মৃদু। তাদের বাড়িতে রেখেই চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব ছিল। কিন্তু তাদের মাধ্যমে অন্যরা যাতে আক্রান্ত না হন, তাই তাদের হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।’
তিনি বলেন, “আর আক্রান্তরা যে উপজেলার বাসিন্দা, সেখান থেকে যেন রোগটি ছড়িয়ে না পড়তে পারে সেজন্য সেখানে কঠোর নজরদারির ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট জেলা এবং উপজেলা প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে”।
আইইডিসিআর পরিচালক আরও বলেন, “যে কোনও ধরণের গণজমায়েত বন্ধ রাখুন। যেখানে অপরিচিত মানুষের সমাবেশ হতে পারে সেগুলো অব্যশই বন্ধ রাখতে হবে”।
গত ২৪ ঘণ্টায় ১০ জনসহ এখন পর্যন্ত আইইডিসিআরে ২৪১ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আক্রান্ত আট জন ছাড়া আর কারও মধ্যে করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি মেলেনি। এছাড়াও, এই মুহূর্তে আইসোলেশনে আছেন ১০ জন আর প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে আছেন চার জন।
বয়স্ক এবং যারা দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতায় ভুগছেন, তাদের বাড়িতে থাকার নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, অত্যাবশ্যকীয় হলে যেন বয়স্ক এবং অসুস্থ ব্যক্তিরা মাস্ক ব্যবহার করে বাইরে যান।
মীরাজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা আরও বলেন, বিভিন্ন দেশের তথ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রোগীরা মৃদু লক্ষণ-উপসর্গে ভুগছেন। যাদের ক্ষেত্রে হাসপাতালে যাওয়ার কোনও প্রয়োজন পরে না। তাই আমরা জোর দিচ্ছি সতর্কতায়, জনগণের অংশগ্রহণ ছাড়া এ রোগ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়।
প্রসঙ্গত, দেশে এ নিয়ে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো মোট ৮ জনে। প্রথমে ইতালি থেকে আসা দুই পুরুষ এবং দেশে থাকা তাদের একজনের এক নারী আত্মীয় করোনায় আক্রান্ত হন। গত ৮ মার্চ এ তথ্য জানায় আইইডিসিআর। তারা তিন জনই চিকিৎসার পর সুস্থ হয়ে এরইমধ্যে বাড়ি ফিরে গেছেন।
এরপর গত ১৪ মার্চ জার্মানি ও ইতালি থেকে আসা আরও দুই ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হন। বর্তমানে তারা চিকিৎসাধীন রয়েছেন। নতুন করে আক্রান্ত তিন জন এদেরই একজনের আত্মীয়। বাংলাদেশে এই প্রথম দু’জন শিশু করোনায় আক্রান্ত হলো।