নারায়ণগঞ্জ ফতুল্লার দেওভোগ আদর্শনগরে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে শরীফ হোসেন (৩০) নামের একজন ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। বুধবার (১ এপ্রিল) সকাল ১১টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। নিহত শরীফ হোসেন আদর্শনগরের আলাল মাতাব্বরের ছেলে।
পুলিশ ও নিহতের স্বজনরা জানান, স্থানীয় বখাটে ও কিশোর গ্যাংয়ের লিডার শাকিল ও লালনসহ কয়েকজন শরীফ হোসেনের মালিকানাধীন বৃষ্টি ইলেট্রনিক্স ও ফার্নিচারের দোকানের সামনে আড্ডা দিতো এবং মাদক সেবন করতো। শরীফ হোসেন তাদের সেখানে আড্ডা দিতে নিষেধ করেন। এনিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা মীমাংসা করে দেয়। কিন্তু কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা বিষয়টি মেনে নেয়নি। বুধবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে ওই গ্যাংয়ের এক সদস্য শরীফ হোসেনকে মোবাইল ফোনে বাসা থেকে ডেকে একটি রিকশার গ্যারেজের সামনে নিয়ে যায়। সেখানে শাকিল ও লালনসহ ১০-১২ জন তাকে কুপিয়ে ও ছুরিকাঘাত করে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।
আদর্শ নগর এলাকার স্থানীয় একটি বাড়ির সিসি টিভির ফুটেজে দেখা যায়- কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা রামদা, বড় ছোরা, লোহার রড ও লাঠি নিয়ে ১০-১২ জনের একটি দল দৌড়ে রিকশার গ্যারেজের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এর এক মিনিটের মধ্যেই আশেপাশের লোকদের ছোটাছুটি করে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে দেখা যায়। দুই-তিন মিনিটের মধ্যে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের আবারও পালিয়ে যেতে দেখা যায়।
নিহতের বাবা আলাল মাতাব্বর জানান, কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য শাকিল লালনসহ কয়েকজন পূর্ব শত্রুতার জের ধরে তার একমাত্র ছেলেকে কুপিয়ে হত্যা করেছে।
নিহতের মা রহিমা বেগম জানান, বাসা থেকে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে তার ছেলেকে হত্যা করা হয়। শালিক ও লালন এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাসী কর্যকলাপ করে আসছিল। কিন্তু পুলিশ তাদের গ্রেফতার করেনি। স্থানীয় কিছু প্রভাবশলী নেতার আশ্রয়ে তারা এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব করে চলছে।
তিনি আরও জানান, শরীফ হোসেন প্রায় পাঁচ বছর সৌদি আরব ছিল। দেশে ফিরে এসে ইলেকট্রনিক্স ও ফার্নিচারের ব্যবসা শুরু করে। তিন মাস আগে বিয়ে করে সে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক অঞ্চল) মেহেদী ইমরান সিদ্দিকী জানান, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে শরীফ হোসেন নামের এক ব্যবসায়ীকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে কিশোর সন্ত্রাসীরা। হত্যাকাণ্ডের সময়ের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে হত্যাকারীদের শনাক্ত করা হয়েছ। তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার জন্য পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে।