গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ভারতে পাচারের অভিযোগে দেব প্রসাদ সাহা নামে এক পুলিশ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে একটি মামলা করা হয়েছে।
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) বেনাপোল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন খান এ তথ্য জানান। তিনি জানান, রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) সকালে যশোরের বেনাপোল বন্দর থানা-পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে।
এর আগে গত ১৫ ডিসেম্বর বেনাপোল বন্দর থানায় ওসি মামুন খান বাদী হয়ে দেব প্রসাদ সাহার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে একটি মামলা করেন।
এর পরিপ্রেক্ষিতেই রাজধানীর উত্তরা থেকে গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্ত দেব প্রসাদ সাহাকে। পরে ওইদিনই তাকে যশোর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় তাকে ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন জানায় পুলিশ।
রিমান্ড শুনানি শেষে ওই আদালতের বিচারক সাইফুদ্দিন হুসাইন বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করে তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
পুলিশ সূত্র জানায়, দেব প্রসাদ সাহা ঢাকার উত্তরা ১ নম্বর আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নে কনস্টেবল হিসেবে কর্মরত। তার বাড়ি খুলনার তেরখাদা উপজেলা সদরে, বাবার নাম সুরেন্দ্রনাথ সাহা।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, দেব প্রসাদ সাহা ২০১৪ সালের ২৭ ডিসেম্বর থেকে ২০১৮ সালের ১৭ আগস্ট পর্যন্ত বেনাপোল অভিবাসন বিভাগে কর্মরত ছিলেন। সেখানে কর্মরত থাকা অবস্থায় তিনি যখন-তখন শূন্যরেখা অতিক্রম করে ভারতে যাওয়া আসা করতেন।
বেনাপোলে দায়িত্ব পালনকালে সেনাবাহিনীর অফিস সহকারী আবু হানজালা রানা ও সৈনিক শাহনেওয়াজ শাহিনের সঙ্গে তার পরিচয় ও সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। ওই দুই ব্যক্তি মাঝে মধ্যে বেনাপোলে এসে ভারতের এস চক্রবর্তী ও পিন্টু নামে দুজনের কাছে বাংলাদেশের গোপনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাচার করতেন।
২০১৮ সালের শেষের দিকে দেব প্রসাদ সাহা বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংবলিত একটি পেনড্রাইভ শূন্যরেখা অতিক্রম করে ভারতে পাচার করেন। ১৫ দিন পর তিনি আবু হানজালা রানার কাছ থেকে এনে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংবলিত পেনড্রাইভ ভারতের এস চক্রবর্তী ও পিন্টুর কাছে হস্তান্তর করেন। গত ২৫ অক্টোবর ঢাকার কমলাপুরের একটি হোটেল থেকে ডিজিএফআই ও র্যাবের হাতে সৈনিক শাহানেওয়াজ শাহিন আটক হন।
এ সময় তার কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ একটি পেনড্রাইভ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি ভারতের কাছে তথ্য পাচারের বেশ কিছু তথ্য দেন। এরপর বিষয়টি পুলিশ হেড কোয়ার্টারস তদন্ত কমিটি গঠন করে অনুসন্ধানে নামে। তদন্তে তাদের মোবাইল ফোনের কললিস্ট ও ভারতের পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আরেফের সঙ্গে কথোপকথনের ভিডিও সিডির মাধ্যমে ভারতে বাংলাদেশের তথ্য পাচারের বিষয়টি উঠে আসে।
বেনাপোল থানার ওসি মামুন খান বলেন, আদালতে হাজির করে দেব প্রসাদকে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন জানানো হয়েছে। রিমান্ড আবেদন মঞ্জুরের পর তাকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।