লক্ষ্মীপুর: সদ্য অনুষ্ঠিত লক্ষ্মীপুর-৩ (সদর) আসনের উপনির্বাচনের কেন্দ্র খরচের টাকার ভাগাভাগি নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতার মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে।
বুধবার (৮ নভেম্বর) রাতে জেলা শহরের মিয়ারাস্তা মাথা আশুরা জেনারেল হাসপাতালে এ মারামারি ঘটনা ঘটে।
লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মোরশেদ আলম সবুজ ও জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহীন আলম মারামারিতে জড়ান।
এতে আওয়ামী লীগ নেতা মোরশেদ ও তার ছেলে সাইফুর রহমান শাওন ও ছাত্রলীগ নেতা শাহীন আহত হন।
তারা জেলা সদর হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
ঘটনার সময় স্থানীয় আ.লীগ নেতা ডা. জাকির হোসেন ও জাফর মুহুরি উপস্থিত ছিলেন।
তারা মারামারি থামানোর চেষ্টা করেন।
এ ঘটনায় লক্ষ্মীপুর থানায় মামলা দায়ের করেছেন মারামারিতে আহত আ.লীগ নেতা মোরশেদ আলম সবুজ।
এতে জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শাহীন আলম (২৮), তার ছোট ভাই আরজু (২৩), আরজুর দুই বন্ধু রাব্বি ও পাপনকে আসামি করা হয়েছে।
জানা গেছে, সদ্য সমাপ্ত উপনির্বাচনের কেন্দ্র খরচের জন্য এক লাখ টাকা দিয়েছেন নৌকার মনোনীত প্রার্থী গোলাম ফারুক পিংকু। ওই টাকা নিয়ে নির্বাচনের আগেরদিন রাত থেকে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। সর্বশেষ টাকার ভাগাভাগি নিয়ে আশুরা জেনারেল হাসপাতালের ডা. জাকির হোসেনের কক্ষে আওয়ামী লীগ নেতা সবুজ ও ছাত্রলীগ নেতা শাহীন বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন।
একপর্যায়ে সবুজ ছাত্রলীগ নেতা শাহীনের জামার কলার চেপে ধরে তাকে মারধর করতে থাকেন। এসময় শাহীনও ক্ষিপ্ত হয়ে সবুজের ওপর চড়াও হন। খবর পেয়ে হাসপাতালে গিয়ে সবুজের কলেজপড়ুয়া ছেলে শাওন গিয়ে দ্বিতীয় দফায় মারামারিতে জড়ান।
জানতে চাইলে ছাত্রলীগ নেতা শাহীন আলম বলেন, নির্বাচনের দিন আমরা ছাত্রলীগ বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার এনেছি, নির্বাচনে কাজ করেছি। কিন্তু নির্বাচনের কেন্দ্র খরচের এক লাখ টাকার ব্যাপারে আওয়ামী লীগ নেতা সবুজের কাছে জানতে চাইলে তিনি সঠিক হিসাব দিতে পারেননি। উল্টো আমার সঙ্গে তর্কে জড়ান। এক পর্যায়ে তিনি আমার গায়ে হাত তোলেন। পরে তার ছেলে এসেও আমাকে মারধর করেছে।
আওয়ামী লীগ নেতা সবুজ বলেন, আমাদের নৌকার প্রার্থী কেন্দ্র খরচের জন্য এক লাখ টাকা দেয়। ওই টাকা থেকে শাহীনকে ২৯ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। এরপরও শাহীন আরও টাকা দাবি করে। বুধবার রাতে শাহীনের সঙ্গে ডা. জাকির হোসেনের চেম্বারে কথা কাটাকাটি হয়। সে ক্ষিপ্ত হয়ে আমার গায়ে হাত তোলে। পরে আমি আমার ছেলেকে খবর দিই। আমার ছেলে এলে শাহীন ও তার ভাই আমার ছেলেকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে জখম করে। এতে তার মাথা ফেটে যায়।
তিনি বলেন, শাহীন বিবাহিত, সে কীভাবে ছাত্রলীগ করে? তার একটি কিশোর গ্যাং চক্র আছে। তার বেশিরভাগ কার্যকলাপ বিতর্কিত। তার বিরুদ্ধে আমি থানায় মামলা করছি।
এ ব্যাপারে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোসলেহ উদ্দিন বলেন, মারামারির ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।