বগুড়ার শিবগঞ্জের ময়দানহাটা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মেজবাউর রহমানের বিরুদ্ধে দাড়িদহ গ্রামে করোনা ভাইরাসে মৃত সন্দেহে এক ব্যক্তির লাশ দাফনে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (৩০ মার্চ) উপজেলা আওয়ামী লীগ থেকে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হয়। আগামী তিনদিনের মধ্যে সন্তোষজনক জবাব দিতে ব্যর্থ হলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জানা গেছে, মাসুদ রানা নামে এক ব্যবসায়ী গত ২৭ মার্চ রাতে শিবগঞ্জ উপজেলার ময়দানহাটা ইউনিয়নের দাড়িদহ গ্রামের ভাড়া বাড়িতে শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হন। স্ত্রী মাজেদা বেগম বিভিন্ন হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্স চেয়ে ফোন ও প্রতিবেশীদের ডাকলে কেউ এগিয়ে আসেননি। রাত সাড়ে ১১টার দিকে তিনি বিনা চিকিৎসায় মারা যান। পরদিন ২৮ মার্চ বিকাল ৪টা পর্যন্ত তিনি ও তার আট বছরের মেয়ে মাসুমা তাবাসসুম মুন লাশ পাহারা দেন। পরে স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে মৃত মাসুদ রানার দেহ থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়। উপজেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ মাসুদের স্ত্রী ও সন্তানকে হোম কোয়ারেন্টিন ও প্রতিবেশী ১০ বাড়ি লকডাউন করে।
এদিকে স্থানীয় প্রশাসন বাদ মাগরিব পিপিই পরিহিত চার ব্যক্তিকে দিয়ে গ্রামের একটি কবরস্থানে মাসুদ রানার লাশ দাফনের উদ্যোগ নেন। সেখানে গ্রামবাসীকে সঙ্গে নিয়ে ময়দানহাটা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মেজবাউর রহমান লাশ দাফনে বাধা দেন। এরপর প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে সোবহানপুর বড় পুকুরিয়া পীরপল কবরস্থানে লাশ দাফনের চেষ্টা করলে সেখানেও বাধা দেওয়া হয়। এরপর প্রশাসন কঠোর হলে তারা সেখান থেকে সরে আসতে বাধ্য হয়। রাত পৌনে ৮টার দিকে দাফন সম্পন্ন হয়। যদিও সোমবার দুপুরে আইইডিসিআর থেকে আসা রিপোর্টে বলা হয়েছে, মাসুদ রানা করোনাভাইরাসে মারা যাননি। পরে স্থানীয় প্রশাসন মাইকিং করে তার পরিবারকে হোম কোয়ারেন্টিনমুক্ত ও ১০ বাড়ি থেকে লকডাউন প্রত্যাহার করে নেয়।
সোমবার বিকালে শিবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজার রহমান মোস্তা জানান, তার সংগঠনের ময়দানহাটা ইউনিয়নের সভাপতি মেজবাউর রহমান ওই ব্যক্তির লাশ দাফনে বাধা দেওয়ায় নেতৃত্বে দিয়েছেন। এতে সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়। তাই জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অনুমতি নিয়ে মেজবাউরকে তিনদিনের মধ্যে কারণ দর্শাতে নোটিশ করা হয়েছে। সঠিক জবাব দিতে ব্যর্থ হলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিযুক্ত মেজবাউর রহমান ফোন না ধরায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।