সবকিছু পুড়ে গেছে, অক্ষত উদ্ধার দশ মাসের দুই শিশু

বৃদ্ধ বাবার চিৎকারে ঘুম ভাঙে পাশের রুমে থাকা ছেলের। ততক্ষণে আগুন পুরো ঘরে ছড়িয়ে গেছে। বিছানা থেকে ওঠে দৌড়ঝাঁপ দিয়ে ঘরে থাকা দশমাস বয়সী দু’টি শিশুকে আগুনের ভেতর থেকে বের করে জীবন বাঁচানো সম্ভব হলেও শুধুমাত্র পরনের কাপড়টি ছাড়া আর কিছুই রক্ষা করতে পারলোনা এ পরিবারটি।

শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ, থালা-বাসন থেকে শুরু করে অগ্নিকাণ্ডে সবকিছুই পুড়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্তদের দাবি, এ ঘটনায় অন্তত পনেরো লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

ঘটনাটি ঘটেছে রোববার (১৫ ডিসেম্বর) দিনগত রাত দুইটার দিকে কক্সবাজারের রামু উপজেলার ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের শ্রীকুল গ্রামের বাসিন্দা সৌরিন্দ্র মোহন বড়ুয়ার বসত ঘরে। এ ঘটনায় সর্বস্ব হারিয়ে এখন নিঃস্ব তার ছেলে পুলক বড়ুয়া, সুমন বড়ুয়া ও  কানন বড়ুয়া রুমন।

ধারণা করা হচ্ছে, বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে।

ঘটনার পর পর রাত তিনটার দিকে ঘটনাস্থলে ছুটে যান রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) প্রনয় চাকমা ও রামু থানা পুলিশের উপ পরিদর্শক (এসআই) মংছাই মারমা।

ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির মালিক রামু খিজারী বার্মিজ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অফিস সহায়ক ও নৈশ প্রহরী কানন বড়ুয়া জানান, রাত আড়াইটার দিকে তার বাবার চিৎকারে হঠাৎ তাদের ঘুম ভাঙে। ততক্ষণে দেখেন আগুন বাড়ির সবখানে ছড়িয়ে গেছে। এ সময় ঘরে আরও ছিল তার এবং বড় ভাইয়ের স্ত্রী ও তাদের দশ মাস বয়সী দুই শিশু। তারা আলাদা রুমে ঘুমন্ত অবস্থায় ছিল।

রুমন জানান, এ সময় দ্রুত ঘুম থেকে জাগিয়ে দুই শিশুসহ সবাইকে ঘর থেকে বের করে নিয়ে আসি। ততক্ষণে আগুন আরও বেড়ে যাওয়ায় আর ঘরে ঢোকা সম্ভব হয়নি। যে কারণে পরনের কাপড়টি ছাড়া আর কিছুই রক্ষা করা যায়নি।

স্থানীয় বাসিন্দা ও ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী তাপস মল্লিক জানান, রাতের বেলায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটায় কিছুই রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। কোনো প্রাণহানি হয়নি এটাই বড় বিষয়। সবচেয়ে বড় বিষয় ঘরে থাকা দশ মাস বয়সী দুটি শিশুকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।

তিনি বলেন, অগ্নিকাণ্ডে পরিবারটি একেবারে নিঃস্ব। সবকিছু হারিয়ে তাদের মাথার উপরে খোলা আকাশ ছাড়া আর কিছুই নেই। এমন পরিস্থিতিতে পরিবারটির সহযোগিতা দরকার।

ঘটনাস্থলে থেকে রামু থানার এসআই মংছাই মার্মা জানান, ঘরে আগুন যখন লাগে তখন পরিবারের সবাই ঘুমে ছিল। যে কারণে ঘরের কিছুই রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। তবে সবচেয়ে বড় বিষয় দুই শিশুসহ সবাই রক্ষা পেয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *