টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে তোফাজ্জলকে হত্যা করে সেপটিক ট্যাংকে মরদেহ ফেলে দেওয়া হয় বলে স্বীকার করেছেন তোফাজ্জলের স্ত্রী সাথী খাতুন ও তার প্রেমিক উজ্জ্বল।
রোববার (২২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় তারা এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে টাঙ্গাইল বিচারিক হাকিম আদালতে জবানবন্দি দেন।
গত শনিবার কালিহাতীর পাথালিয়া গ্রামের মোকছেদ আলীর বাড়ির টয়লেটের সেপটিক ট্যাংক থেকে তোফাজ্জলের (৩৫) মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
গত বৃহস্পতিবার তোফাজ্জল রাজমিস্ত্রির কাজ করার উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হযে আর ফিরে আসেননি। পরদিন তার স্ত্রী সাথী খাতুন (৩১) কালিহাতী থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। তোফাজ্জলের স্বজনরা খোঁজাখুজির একপর্যায়ে জানতে পারেন বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে তোফাজ্জল পাথালিয়া বাজার থেকে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়েছিলেন। শনিবার তোফাজ্জলের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ওই গ্রামের আব্দুল জলিলের বাড়ির কাছে পাওয়া যায়।
এদিকে শনিবার একই গ্রামের মোকছেদ আলী তার বাড়ির টয়েলেটের সেপটিক ট্যাংকের একটি পাট ভাঙ্গা অবস্থায় দেখতে পান। পরে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দিলে পুলিশ বিকেলে ওই সেপটিক ট্যাংক থেকে তোফাজ্জলের মরদেহ উদ্ধার করে।
তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তোফাজ্জলের স্ত্রী সাথী খাতুন ও তার প্রেমিক পাথালিয়া গ্রামের সেকান্দর আলীর ছেলে উজ্জ্বল মিয়ার জড়িত থাকার বিষয়টি জানতে পারে পুলিশ। শনিবার রাতেই পুলিশ সাথী ও উজ্জ্বলকে গ্রেফতার করে।
কালিহাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান আল মামুন জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সাথী ও উজ্জ্বল তোফাজ্জলকে হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিতে রাজি হন। শনিবার রাতেই নিহত তোফাজ্জলের ছোট ভাই তারা মিয়া বাদী হয়ে তোফাজ্জলের স্ত্রী সাথী খাতুন ও তার প্রেমিক উজ্জ্বলকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন।
রোববার গ্রেফতার সাথী ও উজ্জ্বলকে টাঙ্গাইল বিচারিক হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। তারা দু’জনেই জবানবন্দি দেন। জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আমিনুল ইসলাম উজ্জ্বলের এবং জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম সুমন কুমার কর্মকার সাথীর জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করেন। পরে তাদের কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
কালিহাতী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নজরুল ইসলাম জানান, জবানবন্দিতে সাথী ও উজ্জ্বল বলেছেন, তাদের সম্পর্কে বাধা হয়ে ওঠায় তোফাজ্জলকে হত্যা করার সিদ্ধান্ত নেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী বৃহস্পতিবার রাতে পাথালিয়া বাজারের পেছনে তোফাজ্জলকে গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। পরে গুম করার উদ্দেশে মরদেহ ওই সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দেওয়া হয়।