যানযট নিরসনে হাতিরঝিলের সঙ্গে চট্টগ্রাম রোড মোড় এবং তারাবো লিংক মহাসড়ক চারলেনে উন্নীত করতে যাচ্ছে সরকার। ফলে কম সময়েই হাতিরঝিল হয়ে চট্টগ্রাম সড়কে পৌঁছানো সম্ভব হবে।এজন্য ১ হাজার ২০৯ কোটি টাকার প্রকল্প নেয়া হচ্ছে। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে (পিপিপি) এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নিবার্হী কমিটি (একনেক) সভায় প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে। রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধানমন্ত্রী শেথ হাসিনা সভাপতিত্ব করবেন।
পিপিপি’র ভিত্তিতে হাতিরঝিল রামপুরা সেতু বনশ্রী-শেখেরজায়গা-আমুলিয়া-ডেমরা মহাসড়ক (চিটাগাংরোড মোড় এবং তারাবো লিংক মহাসড়ক) চারলেনে উন্নীত করতে এক প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তর।
প্রকল্প প্রসঙ্গে ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সিনিয়র সহকারী প্রধান সাইফুল ইসলাম মন্ডল বাংলানিউজকে বলেন, হাতিরঝিল-বনশ্রী হয়ে চট্টগ্রাম রোড পর্যন্ত চারলেন সড়ক হবে। ফলে ঢাকা শহর থেকে বের হওয়ার উন্নত করিডর তৈরি হবে। হাতিরঝিল থেকে চট্টগ্রাম রোডে কম সময়ে যাতায়াত করা যাবে। প্রকল্পটি চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য একনেক সভায় উপস্থাপন করা হবে।
অর্থ দিয়ে প্রকল্প এলাকায় জমি অধিগ্রহণ, পুনর্বাসন, ক্ষতিপূরণ ও ইউটিলিটি স্থানান্তরের কাজ সম্পন্ন করা হবে। একই সঙ্গে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী পরামর্শক এবং স্বাধীন প্রকৌশল পরামর্শক সেবার মাধ্যমে নির্মাণ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কার্যক্রম সুপারভাই বা তদারকি করা হবে। এজন্য প্রয়োজনীয় কম্পিউটার সামগ্রি, ভাড়াভিত্তিক যানবাহন ব্যবহার করা হবে। প্রকল্পের আওতায় ৭২ জন সরকারী কর্মকর্তা বিদেশ সফর করবেন। তাদের জন্য রাখা হয়েছে আলাদা বরাদ্দ।
সড়ক বিভাগের প্রস্তাব অনুসারে সাড়ে ১৩ কিলোমিটার মহাসড়ক চারলেনে উন্নীত করা হবে। সড়কটি হাতিরঝিল সংলগ্ন রামপুরা সেতুর কাছ থেকে শুরু হয়ে বনশ্রী-মেরাদিয়া-শেখের জায়গা-আমুলিয়া-ডেমরা পর্যন্ত যাবে। সড়কটির একটি অংশ ডেমরা থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চিটাগাং রোডে শেষ হবে। আরেকটি অংশ সুলতানা কামাল সেতু হয়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের তারাবো লিংক মহাসড়ককে যুক্ত করবে। উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) অনুসারে, অনুমোদন পেলে চলতি অর্থবছরের জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর নাগাদ কাজ শেষ হবে।
আলোচ্য সড়কটি চারলেনে উন্নীত হলে প্রতিদিন ১১ হাজার যানবাহন চলাচল করতে পারবে। মহাসড়কটি রাজধানী ঢাকার সঙ্গে বন্দরনগর চট্টগ্রাম, সিলেট, নারায়ণগঞ্জসহ অন্য জেলা সংযোগ করবে। প্রস্তাবিত রুটটি গুলশান, বাড্ডা, ফার্মগেট, তেজগাঁও, বনানী, রামপুরা ও উত্তরার যানবাহনক আকৃষ্ট করবে। এছাড়া, এটি দুটি গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় মহাসড়ক ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সঙ্গে সংযুক্ত হবে।
আলোচ্য সড়কের মূল প্রকল্পের তিনটি অংশ রয়েছে। প্রথমটি হচ্ছে রামপুরা ব্রিজ থেকে ডেমরা সার্কেল। দ্বিতীয়টি হচ্ছে ডেমরা সার্কেল থেকে চিটাগাং রোড। আর তৃতীয়টি ডেমরা থেকে তারাব মোড় পর্যন্ত। প্রথম অংশটি সাড়ে ৯ কিলোমিটার। সড়কটি রামপুরা থেকে বনশ্রী আইডিয়াল স্কুল পর্যন্ত এক কিলোমিটার ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আওতাভুক্ত। বনশ্রী আইডিয়াল স্কুল থেকে মেরাদিয়া পর্যন্ত ১ দশমিক ২৫ কিলোমিটার সড়ক ও জনপথের আওতাভুক্ত। রামপুরা ব্রিজ থেকে মেরাদিয়া পর্যন্ত বর্তমানে সড়কের পাশে লেক রয়েছে। লেক ও বিদ্যমান সড়কের মধ্যে অব্যবহৃত সড়ক ঢালে পিয়ারের মাধ্যমে এলিভেটেড সড়ক নির্মাণ করা হবে।