সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় ৭ বছরের শিশু তোফাজ্জল হোসেনকে
মুক্তিপণ হিসেবে ৮০ হাজার টাকা দাবি করেছিল অপহরণকারীরা।
পুলিশের প্রাথমিক ধারণা মুক্তিপণের টাকা না পাওয়ায় খুন করা হয় তোফাজ্জলকে।
এদিকে শিশু তোফাজ্জেল হত্যায় জড়িত সন্দেহে ৯ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য
থানায় নিয়ে গেছে পুলিশ।
আটক কৃতরা হল, তাহিরপুর উপজেলার বাঁশতশা গ্রামের তোফাজ্জলের দাদা জয়নাল,
চাচা ইকবাল হোসেন, ফুফু শেফালী বেগম, অপর ফুফু শিউলী বেগম, প্রতিবেশী হবি
রহমান, তার স্ত্রী খাইরুন নেছা ও তাদের ছেলে রাসেল।
এছাড়া মরদেহ উদ্ধার করার পর এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে একই গ্রামের কালা মিয়া
ও তার ছেলে সেজাউল কবিরকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত ৮ জানুয়ারি বুধবার বিকেলে তাহিরপুর
উপজেলার সীমান্তবর্তী গ্রাম বাশতলা দাদা জয়নাল মিয়ার বাড়ির সামনে থেকে
নিখোঁজ হয় তোফাজ্জেল। আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীরা খোঁজ করলেও শিশুটিকে
পাওয়া যায়নি। এঘটনায় তোফাজ্জেলের দাদা জয়নাল ৯ জানুয়ারি থানায় জিডি করেন।
তোফাজ্জেলের বাবা জুবায়ের হোসেন জানান, ৯ জানুয়ারি রাতে কে বা কারা শিশু
তোফাজ্জেলের পায়ের এক জোড়া জুতাসহ ৮০ হাজার টাকা মুক্তিপণের একটি চিরকুট
বাড়ির বারান্দায় রেখে যায়।
তোফাজ্জেলের মা রিয়া বেগম অভিযোগ করে বলেন,প্রায় এক বছর আগে তার ননদ
শিউলি বেগমকে বিয়ে দেন একই গ্রামের কালা মিয়ার ছেলে সেজাউল কবিরের সঙ্গে।
বিয়ের এক মাস পর শিউলি বেগমকে নির্যাতন করা শুরু করে পরিবার। এনিয়ে তোফাজ্জেলের পরিবারের সঙ্গে প্রায়ই ঝগড়া বিবাদ লেগেই থাকত সেজাউল ও তার পরিবারের। তাছাড়া সেজাউলের বিরুদ্ধে একটি মামলাও চলমান রয়েছে আদালতে। তারাই তোফাজ্জলকে হত্যা করেছে বলে দাবি করেন তিনি।
তোফাজ্জেলের বাবা জুবায়ের হোসেন বলেন, সেজাউল কবির ও কালা মিয়া আমার
ছেলেকে অপহরণ করে খুন করেছে। আমি তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়ে তাহিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.
আতিকুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, বিষয়টি যেহেতু খুবই স্পর্শকাতর তাই আমরা
জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৯ জনকে থানায় নিয়ে এসেছি। তাদেরকে জিজ্ঞাবাদ করা
হচ্ছে। আশা করি দ্রুত খুনের কারণ জানা যাবে।
উল্লেখ্য, নিখোঁজের চারদিন পর শনিবার সকালের দিকে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর
সীমান্তে বস্তাবন্দি অবস্থায় তোফাজ্জল হোসেন নামে সাত বছর বয়সী এক শিশুর
মরেদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত তোফাজ্জল উপজেলার শ্রীপুর উওর ইউনিয়নের সীমান্ত গ্রাম বাঁশতলা দারুল
হেদায়েত মাদ্রসার প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।