করোনার প্রভাবে গত পাঁচ দিন ধরে ঘরে অবরুদ্ধ সময় কাটাচ্ছেন মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার চার এলাকার ৭৮ হাজার মানুষ। পৌরসভার ২ ও ৩ নং ওয়ার্ড এবং পাঁচ্চর ইউনিয়নের একটি গ্রাম ও দক্ষিণ বহেরাতলা ইউনিয়নের একটি গ্রামের চারিদিকে পুলিশ প্রহরা বসানো হয়েছে।
শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান জানান, পাহারায় থাকা পুলিশের মাধ্যমেই এখানকার অবস্থাসম্পন্ন ব্যক্তিরা খাদ্যদ্রব্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি কিনছেন। যাদের আর্থিক অবস্থা খারাপ, তাদের তালিকা তৈরি করে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাবার পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।
দক্ষিণ বহেরাতলা এলাকার রুবেল হোসেন জানান, তারা সবাই নিজেদের এবং এলাকার মানুষের সবার স্বার্থে এই অবরুদ্ধ পরিস্থিতি কঠিনভাবে মেনে চলছেন।
গৃহবধূ মনোয়ারা বেগম বলেন, ‘আমরা সবাই ঘরের মধ্যে থাকছি। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাড়ির বাইরে, এমনকি ঘরের বাইরেও বের হচ্ছে না।’
মাদারীপুর জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, মাদারীপুরে বর্তমানে ৩২৬ জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ১৮ জনকে এবং কোয়ারেন্টিনের মেয়াদ শেষে অব্যাহতি পেয়েছেন ২৬ জন।
মাদারীপুরের সিভিল সার্জন শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এসব এলাকার দরিদ্র মানুষের জন্য ৪ ধরনের খাদ্যদ্রব্য পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া জরুরি প্রয়োজনে তাদের চিকিৎসা সেবা এবং ওষুধও পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।’
সোমবার (২৩ মার্চ) মাদারীপুর পৌরসভা হলরুমে জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। এখানে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক ওয়াহিদুল ইসলাম, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুব হোসেন, সিভিল সার্জন ডা. শফিকুল ইসলাম, পৌর মেয়র খালিদ হোসেন ইয়াদসহ সমাজের বিভিন্ন স্তরের প্রতিনিধিরা।
এদিকে শুধু মাদারীপুরের শিবচরেই নয়, পুরো জেলার বাকি ৩টি উপজেলাতেও অপ্রয়োজনীয় দোকানপাট বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভায় হাট-বাজারগুলোর জন্যও একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া হচ্ছে।