যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জৈব পদার্থবিদ ও নোবেলজয়ী মাইকেল লেভিট ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন, নতুন করোনাভাইরাস শিগগিরই নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে লেভিট বলেছেন, ‘এখন সবার আগে আমাদের ভীতি দূর করতে হবে। তাহলে সব ঠিকঠাক হয়ে যাবে।’
নোবেলজয়ী জৈব পদার্থবিদ বলেন, মহাবিপর্যয়ের যে ধরনের সতর্কবার্তা দেওয়া হচ্ছে, তথ্য তা সমর্থন করছে না। [আক্রান্ত ও মৃতের] সংখ্যা এখনও সুবিধাজনক না, তবে ধীরে ধীরে আক্রান্তের হার কমার প্রমাণ রয়েছে।
২০১৩ সালে রসায়নে নোবেল পুরস্কার পান লেভিট। অন্য স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা পূর্বাভাস দেওয়ার আগেই লেভিট চীনের মহামারি সম্পর্কে পূর্বাভাস দিয়েছিলেন তিনি। বলেছিলেন, করোনাভাইরাস মহামারি সর্বনাশা বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। মৃত্যুর মিছিল যখন বড় হচ্ছিলো ক্রমাগত, তারই একপর্যায়ে তিনি জানিয়েছিলেন, এবার মৃত্যুহার কমে আসতে শুরু করবে। সেই ভবিষ্যদ্বাণী সত্য হয়েছিল।
লেভিট পরিসংখ্যান থেকে ৭৮টি দেশের কথা তুলে এনেছেন, যেখানে অন্তত ৫০ জনের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। ওই দেশগুলোর পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে তিনি বলেছেন, সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকলেও এই বৃদ্ধির হার কমতে শুরু করেছে। লস অ্যাঞ্জেলস টাইমসকে তিনি বলেছেন, ‘সবমিলে ধারণা করা যাচ্ছে, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সংক্রমণের হার ব্যাপকভাবে কমে আসতে শুরু করবে’।
সামাজিক দূরত্ব সৃষ্টি ও ভ্যাকসিন দেওয়া করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হলেও তা কঠিন বলে মন্তব্য করেন লেভিট। এই ভাইরাস নিয়ে ভীতি সৃষ্টির জন্য গণমাধ্যমের ওপর অভিযোগ তোলেন এ বিজ্ঞানী। লেভিট বলেন, অতি প্রতিক্রিয়া দেখালে আরেক সমস্যা সৃষ্টি হবে। চাকরি হারানোর পাশাপাশি চারপাশে হতাশার চিত্র ফুটে উঠবে।
এর আগে চীনে যখন কোভিড-১৯–এ আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছিল, তখন আশাবাদ শোনাচ্ছিলেন লেভিট। তিনি বলেছিলেন, মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ার হার আগামী সপ্তাহ থেকে কমে যাবে। তার দেওয়া পূর্বাভাস অনেকটাই ফলে গেছে। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে তিনি পূর্বাভাস দেন, চীনে ৮০ হাজার আক্রান্ত হবে এবং ৩ হাজার ২৫০ জনের মতো মারা যেতে পারে। ১৬ মার্চ চীনের তথ্য অনুযায়ী, দেশটিতে ৮০ হাজার ২৯৮ জন আক্রান্ত হয়েছে এবং ৩ হাজার ২৪৫ জন মারা গেছে।