আফগানিস্তানে বিধ্বস্ত হওয়া বিমানে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ’র কর্মকর্তা ডি. আন্দ্রিয়া নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে ইরান। ডি আন্দ্রিয়া সিআইএ’র ইরান মিশনের প্রধান এবং সম্প্রতি কাসেম সোলেইমানি হত্যার মূল কারিগর হিসেবে বিবেচনা করা হয় তাকে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে ওই বিমানে সিআইএ’র কোনও কর্মকর্তা ছিলেন না।
সোমবার আফগানিস্তানের গজনি প্রদেশে যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিমান দুর্ঘটনায় বিধ্বস্ত হয়েছে বলে দাবি করে দেশটির সশস্ত্র গোষ্ঠী তালেবান। পরে এ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছে মার্কিন বাহিনী। বোম্বার্ডিয়ার ই-১১এ বিমানটি মার্কিন বিমান বাহিনীর বৈদ্যুতিক নজরদারি বিমান।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য মিরর এর প্রতিবেদনে বলা হয়, গজনি প্রদেশের তালেবান-নিয়ন্ত্রিত দেহ ইয়াক জেলায় স্পাই বিমানটি এটি বিধ্বস্ত হয়। বিমানটির আরোহীদের মধ্যে মিশেল আন্দ্রিয়া ছিলেন কী না বা তার নিহতের বিষয়ে মুখ খোলেনি ওয়াশিংটন। তালেবানদের দাবি তারা ৬ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে। আর আফগান পুলিশেরদাবি, চারজন নিহত এবং দুজন নিখোঁজ। ফলে বিমান বিধ্বস্তের কারণ ও পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে ধোয়াশা রয়েছে।
ইরানি সংবাদমাধ্যম মিজানের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, নিহতদের মধ্যে ডি আন্দ্রিয়া ছিলেন। তবে এই দাবির পেছনে কোনো ধরনের প্রমাণ দেয়নি তারা। ইরানের আরেকটি রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম প্রেস টিভিও মিশেল আন্দ্রিয়ার নিহতের খবর দিয়েছে। রাশিয়ার গোয়েন্দা সূত্রে তারা সিআইএ’র শীর্ষ কর্মকর্তার খবর নিশ্চিত করেছে।
মার্কিন গোয়েন্দা বাহিনীর অন্যতম দুর্ধর্ষ কমান্ডার হিসেবে পরিচিত মিশেল আন্দ্রিয়া। তাকে বলা হয় ‘ডার্ক প্রিন্স’ ১৯৭৯ সালে সিআইএতে যোগ দেন তিনি। ইরানে একাধিক অভিযান চালানোর জন্য আয়াতুল্লাহ মাইক হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠেন মার্কিন এই শীর্ষ গোয়েন্দা কর্মকর্তা। ইরানি জেনারেল কাসেম সোলেইমানিকে হত্যার পেছনে মূল কারিগর মনে করা হয়ে থাকে আন্দ্রিয়াকে। আল কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেনকে খুঁজে পেতেও বড় ধরনের ভূমিকা রেখেছিলেন তিনি।
২০১২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত হলিউড সিনেমা ‘জিরো ডার্ক থার্টি’র চরিত্র ‘দ্য উলফ’ তৈরি করা হয়েছে আন্দ্রিয়া মিশেলের অনুপ্রেরণায়। পাকিস্তানে ওসামা বিন লাদেনকে হত্যার অভিযানে ছিল দ্য উলফ চরিত্রটি।