ইথিওপিয়ার পশ্চিমাঞ্চলে গত মঙ্গলবার সশস্ত্র হামলার এক ঘটনায় শিশুসহ ১০০ জনের বেশি বেসামরিক লোক নিহত হয়েছেন। দেশটির জাতীয় মানবাধিকার কমিশন (ইএইচআরসি) এ তথ্য জানিয়েছে।
এদিকে ইথিওপিয়ার সরকার বলেছে, সংঘাতকবলিত তাইগ্রে অঞ্চলের সাবেক ক্ষমতাসীন দলের তিন সদস্যকে হত্যা করেছে সেনাবাহিনী। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন দেশটির সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেয়ম মেসফিনও। খবর আল–জাজিরার।
শনিবার (১৯ জুন) স্থানীয় সময় দুপুরে হামলার ঘটনা ঘটে। অনেক নাগরিক ওরোমিয়া অঞ্চল থেকে পালিয়ে গেছেন। রাস্তায় বা বিভিন্ন দোকানে পড়ে থাকা লাশের গণনা করেছে অন্য বাসিন্দারা। তাদের মধ্যে একজন গিম্বি কাউন্টির বাসিন্দা আব্দুল-সইদ তাহির। বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে (এপি) তিনি বলেন, আমি একাই ২৩০টি লাশ গুনেছি। আমরা বেসামরিক নাগরিকদের ওপর মারাত্মক আক্রমণের ঘটনা দেখেছি। আমরা সবাই খুব ভীত।
নিহতদের গণকবরে দাফন করা হয়েছে বলেও জানান আব্দুল-সইদ তাহির। শহরের আর কোথাও কোনো লাশ পড়ে আছে কিনা, খোঁজা হচ্ছে। ফেডারেল সেনা ইউনিট এসে নিরীক্ষা চালিয়েছে। সদস্যরা আক্রান্ত এলাকায় এখনও আছে। তবে তাহির ভয় পাচ্ছেন, সেনা দল চলে গেলে ওএলএ আবার হামলা চালাবে কিনা।
শাম্বেল নামে আরেক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, আমি দেখলাম, শুধু দেখলাম তাদের মুরগির মতো মেরে ফেলা হচ্ছে! স্থানীয় আমহারা সম্প্রদায়ে গণহত্যা ঘটেছে। তারা মৃত্যুর সময় মুরগির মতো ছটফট করছিল।
আবদু হাসান নামে এক বাসিন্দা ৩০০ জনকে হত্যার কথা বলেন। লাশগুলো উদ্ধারের সময় তিনি সঙ্গে ছিলেন বলেও দাবি করেন।
আল জাজিরা স্বাধীনভাবে এসব তথ্য যাচাই করতে পারেনি। ওরোমিয়ার আঞ্চলিক সরকার যেহেতু শতাধিক নিহতের কথা বলছে, সেটিকেই আপাতত মূল তথ্য হিসেবে ধরে নেওয়া হচ্ছে।
আফ্রিকা মহাদেশের দ্বিতীয় সর্বাধিক জনবহুল দেশ ইথিওপিয়া। জাতিগত বিরোধের কারণে দেশটি কার্যত ভাঙনের পথে। এর মধ্যেই হামলার ঘটনাটি ঘটলো।
শনিবারের হামলার ঘটনায় এক বিবৃতিতে আঞ্চলিক সরকার জানিয়েছে, ফেডারেল নিরাপত্তা বাহিনী অভিযান শুরুর পর সেটি প্রতিহত করার চেষ্টায় ছিল ওরোমো লিবারেশন আর্মি। কিন্তু কিছু করে উঠতে না পেরে ন্যক্কারজনক এ হামলা চালায় সংগঠনটি।
এদিকে, ওএলএ মুখপাত্র ওদা তারবি হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এক টুইট বার্তায় তিনি বলেন, ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদের সরকার আবারও আমাদের দোষারোপ করছে, কিন্তু ঘটনাটি তারা নিজেরাই ঘটিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, যে আক্রমণের কথা বলা হচ্ছে, তা দেশের শাসক তার সামরিক বাহিনী ও স্থানীয় মিলিশিয়াকে দিয়ে ঘটিয়েছে। এর আগে তারা আমাদের প্রতিরোধের মুখে গিম্বিতে পিছিয়ে পড়েছিল। তিনি আরও দাবি করেন, ওরোমিয়া অঞ্চলে হামলার যে ঘটনা ঘটেছে, সেখানে আমাদের কোনো সদ্য যায়নি। ওএলএ’র ওপর ওঠা অভিযোগ ভিত্তিহীন।