ইরাকের রাজধানী বাগদাদের মার্কিন দূতাবাস কম্পাউন্ডে অগ্নিসংযোগ করেছে একদল বিক্ষোভকারী। সম্প্রতি ইরাকে মার্কিন বিমান হামলার প্রতিবাদে ৩১ ডিসেম্বর মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত এ বিক্ষোভে মানুষের ঢল নামে। এ সময় উত্তেজিত বিক্ষোভকারীরা ‘আমেরিকা নিপাত যাক’ স্লোগান দেয়। আগুন ধরিয়ে দেয় যুক্তরাষ্ট্রের পতাকা ও দূতাবাসের দেয়ালে।
গত ২৯ ডিসেম্বর ইরাকের আধাসামরিক বাহিনী হাশদ আশ শাবি-র ঘাঁটিতে মার্কিন বিমান হামলায় অন্তত ২৫ জন নিহত হয়। এই বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দেয় ইরানের প্রভাবশালী আল কুদস ফোর্স। হামলার পরপরই এর দাঁতভাঙ্গা জবাব দেওয়ার ঘোষণা দেয় হাশদ আশ শাবি-র মতো আধাসামরিক বাহিনীগুলোকে নিয়ে গঠিত শিয়াপন্থী জোট পপুলার মোবিলাইজেশন ফোর্স (পিএমএফ)। মঙ্গলবারের বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের অনেকের হাতেই ছিল হাশদ আশ শাবি-র পতাকা।
২৯ ডিসেম্বর মার্কিন হামলায় নিহত ইরানপন্থী বিদ্রোহীদের জানাজা শেষে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস অভিমুখে এ বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। বিক্ষোভটি সহিংস হয়ে ওঠার আগেই ভবনটি থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সরিয়ে নেওয়া হয় বলে জানা গেছে। তবে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, দূতাবাসের মূল ভবনের ছাদে অন্তত তিনজন মার্কিন সেনাকে দেখা গেছে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, এদিন দূতাবাসের প্রধান ফটক ভাঙচুরের পর দূতাবাস কম্পাউন্ডে ঢুকে পড়ে কয়েক ডজন বিক্ষোভকারী। এ সময় তারা সেখানকার অভ্যর্থনা এলাকায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে সম্প্রচারিত ফুটেজে দেখা গেছে, দূতাবাস এলাকা থেকে ধোঁয়ার কুণ্ডলি বের হতে দেখা গেছে।
হামলার একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশ্যে লাউডস্পিকার হাতে একজনকে কথা বলতে দেখা যায়। লোকজনকে দূতাবাস কম্পাউন্ডে প্রবেশ না করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের বার্তা দেওয়া হয়ে গেছে।
বড় ধরনের বিক্ষোভটি সহিংসতার দিকে অগ্রসর হলেও নিরাপত্তা বাহিনীকে কোনও অভিযান চালাতে দেখা যায়নি। এমনকি দূতাবাস অভিমুখে আসা মিছিলে কোনও প্রতিবন্ধকতাও তৈরি করেনি সরকারি বাহিনী। যদিও ইতোপূর্বে স্পর্শকাতর কূটনৈতিক এলাকায় কোনও আন্দোলনকারীকে ঢুকতে দেয়নি পুলিশ। কিন্তু এদিনের ঘটনায় সরকারি বাহিনীর ভূমিকা ছিল পুরোপুরি ভিন্ন। বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে সরকারি বাহিনীর উল্লেখযোগ্য তৎপরতা দেখা না গেলেও লোকজনকে ‘অবিলম্বে’ দূতাবাস কম্পাউন্ড ছাড়ার আহ্বান জানিয়েছেন ইরাকের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী আদেল আবদুল মাহদি। তবে এখন পর্যন্ত এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কোনও প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি।