কলম্বিয়ার এক কারাগারে করোনা ভাইরাস নিয়ে উত্তেজনা থেকে দাঙ্গার সৃষ্টি হয়েছে। এতে ২৩ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে ৮৩ জন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, রবিবারের দাঙ্গাকে উদ্বিগ্ন কয়েদিদের জেল ভেঙে পালানোর সম্মিলিত প্রচেষ্টা বলে উল্লেখ করেছে কর্তৃপক্ষ।
আন্তর্জাতিক জরিপ সংস্থা ওয়াল্ড ওমিটারের তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত কলম্বিয়ায় ২৩১ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে দুই জনের। সেখানে কোয়ারেন্টিন ও নাগরিকদের চলাচলে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়েছে।
কলম্বিয়ার বিচার মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, দেশটির মোট ১৩২টি কারাগারে বন্দি ধারণ ক্ষমতা ৮১ হাজার হলেও বন্দি আছে এক লাখ ২১ হাজারেরও বেশি। রাজধানী বোগোতার সবচেয়ে বড় কারাগারগুলোর একটি লা মোদেলো।
কলম্বিয়ার বিচারমন্ত্রী মার্গারিটা কাবেলো জানিয়েছেন, লা মোদেলার কয়েদিরা কারাগার ভেঙে বের হয়ে আসতে চাইছিলো। এ ঘটনায় আহত ৩২ বন্দি ও সাত রক্ষীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, এদের মধ্যে দুই রক্ষীর অবস্থা সঙ্কটজনক। মন্ত্রণালয় ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
বিবিসি জানিয়েছে, দেশটির সব কারাগারের বন্দিরা করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের এ সময়টিতে কারাগারগুলোতে ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত বন্দি ও নাজুক স্বাস্থ্য সেবার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখায়। বিচার মন্ত্রণালয়ের দাবি, সমন্বিত পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এই সহিংসতা হয়েছে। দেশের ১৩টি কারাগার থেকে অস্থিরতার খবর এসেছে বলে জানিয়েছেন কাবেলো।
করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব নিয়ে শঙ্কার মধ্যে কারাগারগুলোতে অস্বাস্থ্যকর পরিস্থিতি বিরাজ করার অভিযোগ অস্বীকার করে কাবেলো বলেন, “এমন কোনও স্বাস্থ্যবিধিগত সংকট ছিল না যে ও ধরনের পরিকল্পনা ও এসব দাঙ্গা হবে। কোনও বন্দি বা হেফাজতে থাকা কারও অথবা প্রশাসনিক কোনো কর্মীরই করোনা সংক্রমণ হয়নি।”
কাবেলোর দাবি, বন্দিরা উন্মত্ত হয়ে উঠেছিল। কয়েকজনের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা ও সম্পত্তির ক্ষতিসাধনের অভিযোগ আনা হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।
বিবিসি জানিয়েছে, লা মোদেলো কারাগারের গেটের বাইরে বন্দিদের বহু স্বজন জড়ো হয়ে তাদের প্রিয়জনদের খবর জানার জন্য অপেক্ষা করছে। তারা জানিয়েছে, কারাগারে নিরাপত্তা বাহিনী প্রবেশের পর তারা গুলির শব্দ শুনেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসা ভিডিওতে বন্দিদের জাজিম, তোশকে আগুন ধরাতে দেখা গেছে।