ভারতের কেরালা রাজ্যে মুসলিমদের পাশে দাঁড়াতে একটি গির্জায় টুপি ও হিজাব পরে খ্রিস্টানদের আনন্দ সংগীত গাইলেন একদল যুবক-যুবতীরা। দেশব্যাপী চলমান নাগরিকত্ব আইনবিরোধী আন্দোলনের মধ্যে সম্প্রীতির বার্তা ছড়িয়ে দিতে পাথানামথিত্তা জেলার কোজেনচেরির গির্জায় তারা এভাবে গান গেয়েছেন।
ভারতীয় সম্প্রচারমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২৫ ডিসেম্বর স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে খবরটি প্রকাশের পর অনুষ্ঠানের ভিডিওটি শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) টুইটারে পোস্ট করেন কংগ্রেস নেতা ও সাংসদ শশী থারুর। তিনি এতে লিখেছেন, ‘এটি আমাদের ভারত। কেউ আমাদের ধর্মীয় ঐক্যে আঘাত হানতে পারবে না।’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোজেনচেরির সেন্ট থমাস মার্থমা গির্জায় টুপি ও হিজাব পরে খ্রিস্টানদের আনন্দ সংগীত গাওয়ার দৃশ্য স্থানীয় অনলাইন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশের পর ইন্টারনেট জগতে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।
গির্জা কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, সেখানে ছেলেরা টুপি ও মেয়েরা হিজাব পরে মুসলিম লোকগীতির সুরে আনন্দ সংগীতটি গেয়েছেন। যে লোকগীতি মাপ্পিলা গান নামে বেশি পরিচিত।
বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে ধর্মীয় কারণে নির্যাতনের শিকার সংখ্যালঘুদের নাগরিকত্ব দিতে সম্প্রতি নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করেছে ভারত। হিন্দু, খ্রিস্টান, জৈন, বৌদ্ধ ও পার্সিদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হলেও এতে মুসলমানদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। এর প্রতিবাদে দেশজুড়ে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ চলছে।
বিক্ষোভ পরিস্থিতির মধ্যেই এক জনসভায় দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দাবি করেছেন, পোশাক দেখে বোঝা যায় কারা বিক্ষোভ করছে, সহিংসতায় মদত দিচ্ছে। মোদির ওই বক্তব্য নিয়ে দেশজুড়ে তীব্র সমালোচনা হয়। শনিবার খ্রিস্টানদের গির্জায় গান গাওয়ার ভিডিওটি টুইটারে প্রকাশ করে শশী থারুর প্রশ্ন তুলেছেন, তাদেরকে কি পোশাক দেখে চেনা যায়? তারা কারা?
চলমান সহিংস বিক্ষোভ-আন্দোলনের মধ্যে কেরালায় খ্রিস্টানদের ওই গির্জায় এই সম্প্রীতির বার্তা সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছে।
সমালোচক ও বিরোধীদের দাবি, আদতে ধর্মের নামে বিভেদের রাজনীতি করছেন প্রধানমন্ত্রী। ১১ ডিসেম্বর বিলটি আইনে পরিণত হওয়ার পর থেকে আন্দোলনে নেমে ইতোমধ্যে অন্তত ২৫ বিক্ষোভকারী প্রাণ হারিয়েছে। সম্পদের ক্ষতি হয়েছে কোটি কোটি টাকার। সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে হাজারের অধিক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। চলছে ক্ষতিপূরণ আদায়ও।